দেশে এখন
0

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা

সরকার মূল দাবি মেনে নেয়ায় সব কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা। আজ (রোববার, ২৮ জুলাই) রাতে ডিবি অফিসে আলোচনা শেষে সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ভিডিও বার্তায় কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। এ সময় আন্দোলনের আরও পাঁচ সমন্বয়ক উপস্থিত ছিলেন।

সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দ্রুত খুলে দিতে আহ্বান জানান তারা। সহিংসতা ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার নিন্দা জানিয়ে তদন্ত করে বিচারের দাবি জানান সমন্বয়ক নাহিদ।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন ও তার প্রেক্ষিতে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনেকে অপ্রত্যাশিতভাবে আহত-নিহত হয়েছেন। এছাড়া রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় অগ্নিসংযোগসহ নানান সহিংস ঘটনা ঘটেছে। আমরা এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে দ্রুত বিচারের দাবি জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রধান দাবি ছিল কোটার যৌক্তিক সংস্কার, যা ইতিমধ্যে সরকার পূরণ করেছে। এখন শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।’

এ সময় নাহিদ বলেন, ‘সার্বিক স্বার্থে আমরা এই মুহূর্ত থেকে আমরা আমাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করছি।’

গত ২৩ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের আলোকে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সাধারণ বা মেধার ভিত্তিতে ৯৩ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ১ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকবে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের ৯ম থেকে ২০তম গ্রেডের চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে এটি কার্যকর হবে।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালে কোটা পদ্ধতি বাতিলের মাধ্যমে  পরিপত্র জারি করে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা তুলে দিয়েছিল সরকার। তবে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির (১৩তম থেকে ২০তম গ্রেড) গ্রেডে ৫৬ শতাংশ পদে কোটার ভিত্তিতে নিয়োগের সুযোগ রাখা হয়।

তবে এক রিট মামলার প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট গত ৫ জুন ২০১৮ সালের জারি করা পরিপত্র বাতিল করে কোটা ফিরিয়ে আনার রায় দেয়। এর পর আবারও কোটা সংস্কারের দাবিতে নতুন করে শিক্ষার্থী আন্দোলনে রাজপথে নামে।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গত ১৯ জুলাই রাতে কারফিউ জারি করে সরকার। বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তায় মোতায়েন করা হয় সেনাবাহিনী।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে নাশকতা-সহিংসতায় ১৪৭ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সরকার। এদের মধ্যে সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, সাংবাদিক এবং পুলিশের কয়েকজন সদস্য রয়েছেন। আজ এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।


ইএ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর