শুক্রবার সকালের বৃষ্টির চিহ্ন ৭২ ঘণ্টা পরেও দেখা গেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকায়। এখনও ভবনের নিচতলার ফ্ল্যাটে পানি। নষ্ট হচ্ছে আসবাব। এমন ভোগান্তি যুগ যুগ ধরে চলে আসছে, অভিযোগ বাসিন্দাদের।
স্থানীয়দের একজন বলেন, 'যখন পানি উঠে নীচ তলায় তখন ৪ থেকে ৫ ফিট পানি থাকে।'
তিনদিন আগে বৃষ্টি রাজধানী ঢাকাকে উপস্থাপন করেছে ভিন্ন আঙ্গিকে। হাঁটু থেকে কোমর সমান পানি জমেছে নগরীর অন্তত অর্ধশত পয়েন্টে। জলজটে শহরের প্রধান কয়েকটি সড়ক পানিতে ডুবে থাকে দীর্ঘক্ষণ। বিকল হয়ে পড়ে যানবাহন। কোথাও কোথাও পানি পারাপারে ব্যবহার হয়েছে রিকশা, ভ্যান। আর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ডুবে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন নিউ মার্কেট, হকার্স মার্কেট, মিরপুরের ফার্নিচার মার্কেটের ব্যবসায়ীরা।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাবে, শুক্রবার ঢাকায় ১৩০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। আর তাতেই ডুবেছে যাদুর শহর ঢাকা। এদিকে শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে দুই সিটি কর্পোরেশন গেল ৪ বছরে খরচ করেছে কমপক্ষে ৭৩০ কোটি টাকা। এমন খবরে প্রশ্ন ওঠে, তবে কি অবাস্তব ঢাকার দুই নগরপিতার জলাবদ্ধতা কমানোর প্রতিশ্রুতি?
নগর পরিকল্পনাবিদরা আকতার মাহমুদ বলেন, ‘ঢাকার ৮৫ শতাংশ যেহেতু কংক্রিটে আবৃত তাই মাটির পানিশুষে নেয়ার সুযোগ কম। ফলে শহরের বৃষ্টির পানি ক্যাচ পিট হয়ে কয়েকটি ধাপে ড্রেন থেকে খাল, নদী বা জলাশয়ে নামে।’
এই ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি বলে দাবি করেন নগর পরিকল্পনাবিদ।
অল্প সময়ে বেশি পরিমাণ বৃষ্টি হওয়ায় পানি নিষ্কাশনে সাময়িক অসুবিধার কথা স্বীকার করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান। তবে, দ্রুত পানি অপসারণে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টার কথাও জানান তিনি।
মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘ড্রেনেজ নিয়ে দক্ষিণ সিটির দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা সফল হলে শতভাগ জলাবদ্ধতা নিরসন হবে।’
এছাড়াও, যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলা ও নাগরিক অসচেতনতায় ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। তাই, জলাবদ্ধতা নিরসনে নাগরিকদের বেশি সচেষ্ট থাকার আহ্বান সিটি কর্পোরেশনের।