দেশে এখন
0

মাছ-মুরগির সমন্বিত চাষ: একসময়ের উৎসাহী প্রকল্প এখন 'গলার কাঁটা'

মাছের ঘেরের ওপর মুরগির শেড। মৎস্য বিভাগ ও প্রাণিসম্পদ বিভাগের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কিশোরগঞ্জের মাথিয়া বনের কয়েকশ' একর কৃষি জমিতে এভাবেই চলছে সমন্বিত মুরগি ও মাছ চাষ। এর মাধ্যমে মুরগির সেই বিষ্ঠা সরাসরি খাবার হিসেবে খাচ্ছে মাছ। এতে, মাছের দেহে ছড়িয়ে পড়ছে অ্যামোনিয়া গ্যাসের মতো বিষাক্ত উপাদান, যা খেলে শঙ্কা আছে দূরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হওয়ার।

কিশোরগঞ্জের দানাপাটুলি ইউনিয়নের মাথিয়া এলাকার প্রবেশমুখে ঢুকতেই চোখ পড়বে রাস্তার দু'পাশে থাকা সারি সারি মাছের ঘের। এর উপর বসানো কয়েকশ' মুরগির শেড। সমন্বিত এই চাষের মধ্যদিয়ে বছরে খামারিদের আয় ১০০ কোটি টাকা। তবে এক সময় এতে খামারিদের উদ্বুদ্ধ করা হলেও এখন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন জেলা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের কর্মকর্তারা।

মূলত মুরগির জন্য অ্যান্টিবায়োটিকের পাশাপাশি ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন উপাদান। যা বিষ্ঠার সাথে প্রবেশ করে মাছের শরীরে। এতে একদিকে মরছে মাছ, অন্যদিকে এসব মাছ দূরারোগ্য ব্যাধির কারণ হতে পারে, বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া মাছের জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে আনা মুরগির বিষ্ঠা ফেলে রাখা হচ্ছে রাস্তার পাশে। এতে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ, ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে পথচারীদের।

এলাকাবাসীরা বলেন, 'দুর্গন্ধ, মশা-মাছির কারণে নানারকম রোগ বালাই হচ্ছে।'

যদিও জনস্বাস্থ্যের ক্ষতির বিষয়টি মানতে নারাজ এখানকার খামারিরা। এছাড়া সমন্বিত চাষে কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় নতুন করে এই পথে ঝুঁকছেন অন্যরাও।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তারা বলছেন, বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায় এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে খামারিদের এই চাষ থেকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব বলে মনে করছেন তারা।

কিশোরগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম জানান, 'সরকারের অন্যান্য যে দপ্তর আছে সবার সমন্বিত উদ্যোগে সমন্বিত চাষের কার্যক্রম থেকে বিরত হবে।'

বর্তমানে মাছ ও মুরগির সমন্বিত চাষে খামারিদের অনুৎসাহিত করা হচ্ছে। এ ছাড়া এই চাষের জন্য নতুন করে কাউকে লাইসেন্স দেয়া হচ্ছে না বলে জানান জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র পণ্ডিত। তিনি জানান, 'আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিয়ে অবিলম্বে এই খামারগুলো আমরা বন্ধ করে দেব।'

এসব মাছ খেয়ে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। এছাড়া দুর্গন্ধে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। তাই শিগগিরই এসব খামার বন্ধের দাবি এলাকাবাসির।