আফাজ উদ্দীন, পেশায় একজন দিনমজুর। নৌকা চালিয়েই তার আয়-রোজগার। পানিতে বাড়ি তলিয়ে গিয়েছে, ভাসিয়ে নিয়েছে সর্বস্ব। উপার্জনের একমাত্র নিয়ামক নৌকার পাটাতন মনোযোগ দিয়ে করছেন মেরামত। বলছিলেন পরিবারের চার সদস্য নিয়ে শেষ ঠিকানা আশ্রয়কেন্দ্র।
আফাজ উদ্দীন বলেন, 'আমরা গরিব মানুষ। নৌকা চালিয়ে রোজগার করি তা দিয়েই সংসার চলে।'
মেঘালয়-চেরাপুঞ্জিতে আবারও টানা বৃষ্টিপাতের ফলে সিলেটের ১৩টি উপজেলায় দ্রুত পানি বাড়ছে। উজান থেকে নেমে আসা পানিতে বন্দী হয়েছেন সাড়ে চার লাখ মানুষ। কোম্পানিগঞ্জের তেলিখালে ৪টি আশ্রয়কেন্দ্রে তিল ধারনের ঠাঁই নেই। মালামাল নিয়ে ছুটছেন বন্যা কবলিতরা।
স্থানীয়দের একজন বলেন, 'খুব অবস্থা খারাপ। চারদিকে পানি। আমরা এই কারণে স্কুলে এসে আশ্রয় নিয়েছি।'
আশ্রয়কেন্দ্রে জায়গা না পেয়ে শহরের দিকে ছুটছেন অনেকেই। সম্প্রতি বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার আগেই আবার বন্যার কবলে পড়ে নিঃস্ব এ অঞ্চলের মানুষেরা।
মেয়র বলছেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে সম্মিলিত প্রয়াসেই মহানগর ও উপজেলায় বন্যাকবলিত মানুষদের ত্রাণ ও উদ্ধারকাজে শতভাগ চেষ্টায় থাকবেন তারা।
সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, 'আমি মেয়র হিসেবে নিজে তদারকি করছি। সবার ছুটি বাতিল করে দিয়েছি। সার্বক্ষণিক আমাদের টিম কাজ করছে।'
এদিকে, উপজেলা প্রশাসন বলছে বন্যার এই পরিস্থিতিতে ত্রাণ, খাদ্য ও সামগ্রিক সহায়তায় ৪০ এর অধিক নৌকা ও জনসাধারণ সর্বোচ্চ সহযোগিতায় তারা নিয়োজিত আছে।
সিলেট গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, '৫৬ টি আশ্রয়কেন্দ্রের মধ্যে এরইমধ্যে ২২টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১ হাজার ৪৪০ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়া ৫শ’ গবাদি পশু রয়েছে।'
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড গতানুগতিকভাবে বলছে, টানা দুইদিন বৃষ্টি না হলে বড় বন্যার শঙ্কা নেই।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী খুশী মোহন সরকার বলেন, 'দুইদিন বৃষ্টি না হলে বড় বন্যার আশঙ্কা নেই। পূর্বাভাস থেকে বলা হচ্ছে স্বল্প মেয়াদি নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হবে।
আগামী ৩দিন সিলেট অঞ্চলে ভারি বর্ষণের পূর্বাভাস রয়েছে। এঅবস্থা চলমান থাকলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে।