দেশে এখন
0

বিধ্বস্ত কয়রার বেড়িবাঁধ, লোকালয়ে চলছে জোয়ার-ভাটা

রিমালের চার দিনেও বাধা যায়নি খুলনার কয়রার দশালিয়া বেড়িবাঁধ। লোকালয়ে এখনও চলছে জোয়ার ভাটা। ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্তদের।

স্বামী ও দুই সন্তান নিয়ে খুলনার কয়রা উপজেলার দশালিয়া গ্রামের কপোতাক্ষ নদীর তীরের বাড়িতে বসবাস নাজমা বেগমের। ঘূর্ণিঝড় রিমালে বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকলয়ে ঢুকে পড়া পানিতে বাড়ির উঠোনে চলছে জোয়ার ভাটা। গত চারদিন চুলায় আগুন জ্বলেনি। কিছু শুকনো খাবার খেয়েই পার করছেন দিন।

নাজমা বলেন, 'হাঁস-মুরগিসহ রান্না করার চুলা সব পানিতে ভাইসা গেছে। তাই রান্না করার কোনো উপায় নাই। দোকানের শুকনা খাবার বাচ্চারে খাওয়াইতাছি। অনেক কষ্টের মধ্যে আছি।'

তাদের মতোই দিন কাটছে এই গ্রামের ৪৮টি পরিবারের। অন্য এলাকার অনেকে সরকারি ত্রাণ পেলেও এ গ্রামের কারও কাছেই তা পৌঁছায়নি। তবে কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে পেয়েছেন শুকনো ও রান্না করা খাবার।

ভেঙে যাওয়া বাঁধটির পাশে স্বেচ্ছাশ্রমে কয়েকবার রিং বাঁধ দেয়ার চেষ্টা করেছেন গ্রামবাসী। প্রতিবারই হয়েছেন ব্যর্থ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতিকে দায়ী করছেন তারা।

স্থানীয়না বলেন, আমাদের ঘর তলিয়ে গেছে। ঘরের ভেতর এখন কিছু নাই। আমরা পানিতে ভাসতেছি, এখনো ত্রাণ পাই নাই। খাবারের ব্যবস্থা নাই, তাই না খেয়েই থাকতে হইতেছে। মেম্বার-চেয়ারম্যানরা কিছুই দেয় না। প্রত্যেকটা জায়গায় বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত। আমাদের শক্ত বাঁধ দরকার।

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে শেষে এসব পরিবারকে দ্রুত সহায়তা দেয়া হবে বলে জানান দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান।

তিনি বলেন, 'ঝড়ের আগেই আমরা মানুষের মাঝে খাবার পৌঁছে দিয়েছি। সারা দেশে ৯ হাজার আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করেছি। এ সপ্তাহের মধ্যে ক্ষতির সমস্ত রিপোর্ট প্রধানমন্ত্রীর কাছে পেশ করবো।'

ঘূর্ণিঝড় রিমালের ক্ষতি বাড়িয়ে দিয়েছে বেড়িবাঁধের ভাঙন। হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। শুধুমাত্র খুলনা বিভাগেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৬১ কিলোমিটার বাঁধ। বাঁধ ভেঙে একাধিক উৎস থেকে লোকালয়ে প্রবেশ করেছে লবণাক্ত পানিও।