দেশে এখন
0

আজ দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে আর্থিকভাবে ভেঙে পড়েছে উপকূলের জেলাগুলো। ক্ষতি হয়েছে বেড়িবাঁধ, মৎস্য, কৃষি, শিক্ষা, সড়ক ও বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থায়। আজ (বৃহস্পতিবার, ৩০ মে) ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নদী জীবন জীবিকার অবলম্বন, কখনোবা ধ্বংস ও আতঙ্কের রূপও। ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে সর্বস্ব হারিয়ে নাসিমা বেগম নামের এক নারীর অসহায় দৃষ্টি নদীর বুকে। ফ্রিজ, টিভি, আসবাব সবকিছুই ভাসিয়ে নিয়ে গেছে রিমাল।

নাসিমা বলেন, 'পানি কমার পর ঘরে আইসা দেখি সব শেষ। জিনিসপত্র কিছু নাই, সব নদীতে নিয়া গেছে। অন্যরা খিচুরি, ভাত দেয়। এখন তাই খাইতেছি।'

উপকূল থেকে ৪০ কিলোমিটার ভিতরে, প্রায় ১৫ ঘণ্টার ঘূর্ণিঝড়ে লণ্ডভণ্ড নদীপাড়ের সবগুলো ঘরবাড়ি। ঘরের কাঠ, টিন, গাছপালা কিছুই টেকেনি ঝড়ের সমানে। ভেসে গেছে জেলেদের জাল, নৌকা। সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব স্থানীয়রা।

যেকোন মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে নাসিমার মাথা গোজার ঠাই। ছবি: এখন টিভি

তারা বলেন, জেলেরা সম্পূর্ণ নিঃস্ব হয়ে গেছে। তাদের কর্মসংস্থানও ধ্বংস। শুধু দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলাম সব ঘরবাড়ি ভেসে যাইতেছে। কিছু করার ছিল না।

সোমবার ৮ থেকে ১০ ফুট পানিতে তলিয়ে যায় নদী তীরের গ্রাম, ভেঙ্গে যায় মসজিদের দেয়াল, নদীতে বিলীন হয়ে যায় আমতলী ফেরিঘাটের বেশকিছু দোকান।

বুধবার (২৯ মে) বিকেলে পৌরসভা থেকে কিছু ত্রাণের আশায় ক্ষতিগ্রস্তদের ভিড় দেখা যায় ঘাটপাড়ে। তবে স্থানীয়দের দাবি ত্রাণ নয়, তারা চায় স্থায়ী সমাধান শক্ত বেড়িবাঁধ।

স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, আমাদের ৫-১০ কেজি চালের দরকার নাই। আমরা একটা শক্ত বেড়িবাঁধ চাই। তাইলেই আমরা খুশি।

রিমালের তাণ্ডবে বরগুনায় বন্যাদুর্গত মানুষের সংখ্যা প্রায় পাঁচ লাখ। এ জেলায় নিহত ১, আহত ৩৭ জন। ১৩টি পয়েন্টের প্রায় ১২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। প্লাবিত হয়েছে ৩ শতাধিক গ্রাম।

এই মাঠেই ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করবেন শেখ হাসিনা। ছবি: এখন টিভি

পাশের জেলা পটুয়াখালীতে নিহত হয়েছেন তিনজন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তিন লাখ ৩৮ হাজার মানুষ। কৃষিতে ক্ষতি ২৬ কোটি ২১ লাখ টাকা এবং মৎস্যে ২৮ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।

ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে দুর্যোগপ্রবণ পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মজাহার উদ্দিন কলেজ মাঠে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করবেন।

দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান বলেন, 'এখানের মানুষের দুর্দশার চিত্র নিজ চোখে দেখা এবং তাদেরকে সহযোগিতার জন্যই প্রধানমন্ত্রী আসছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য যে ধরনের সহযোগিতা দরকার তার সবই প্রত্যেক এলাকায় আমরা পৌঁছে দিয়েছি।'

সরকার প্রধানের আগমন উপলক্ষে ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।