কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার মঙ্গলবাড়ীয়া গ্রামকে সবাই লিচু গ্রাম হিসেবেই চেনে। এখানকার লিচু দেশের গণ্ডি পেরিয়ে যায় বিদেশেও।
এই লিচু আকারে যেমন বড়, তেমনি রঙ ও স্বাদেও সেরা। এ কারণে সারাদেশে মঙ্গলবাড়ীয়ার লিচুর রয়েছে বাড়তি কদর। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, এবার লিচুর দাম কিছুটা বেশি। ১০০ লিচু বিক্রি হচ্ছে এক হাজার টাকায়।
একজন ক্রেতা বলেন, 'এখানকার লিচুটা অনেক সুস্বাদু। কিন্তু এবার দামটা বেশি।'
প্রচলিত আছে প্রায় ২০০ বছর আগে সুদূর চীন থেকে চারা এনে লাগানো হয় মঙ্গলবাড়ীয়া গ্রামে। অধিক ফলন ও রসালো কিন্তু ছোট বিচির কারণে এ লিচুর প্রশংসায় পঞ্চমুখ সকলেই। পরবর্তীতে এই জাতের লিচুর কলম চারা ছড়িয়ে পড়ে গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে। লাভজনক হওয়ায় লিচু চাষে আগ্রহী হয়ে উঠে গ্রামবাসী। বর্তমানে এলাকার প্রতিটি বাড়িতেই রয়েছে লিচুর গাছ।
স্থানীয় একজন লিচু চাষী বলেন, 'আমার প্রায় ২০০টির বেশি গাছ আছে। প্রতি বছর লাখ টাকার বেশি লিচু বিক্রি করি।'
শুরুতে শৌখিনভাবে শুরু হলেও গত কয়েক দশক ধরে এ গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয় লিচু চাষ। মাঙ্গলবাড়ীয়ার মত জেলার নারান্দি, কুমারপুর, হোসেন্দি ও শ্রীরামদি গ্রামেও ব্যাপক হারে লিচুর চাষ হচ্ছে। তবে গত মৌসুমে প্রায় ১০ কোটি টাকার লিচু বিক্রি হলেও এবার তা নেমে এসেছে এক তৃতীয়াংশে। খরা ও শিলাবৃষ্টিতে নষ্ট হয়েছে গেছে অধিকাংশ লিচু।
কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামে ১০ হাজারের কাছাকাছি লিচু গাছ রয়েছে। এবার তীব্র তাপদাহে ফলন বিপর্যয় হয়েছে বলে জানান এই কর্মকার্তা।
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূর ই আলম বলেন, 'প্রতিদিন গড় তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রির বেশি। এই তাপমাত্রার কারণে আমাদের অনেক লিচু ঝড়ে পড়েছে।'
লিচু স্থানীয় অর্থনীতির অন্যতম একটি খাত। লিচুর পরিকল্পিত চাষাবাদ পাল্টে দিতে পারে স্থানীয় অর্থনীতির চিত্র।