দেশে এখন
0

রাজধানীতে বসছে এআই ট্রাফিক সিস্টেম

ক্ষমতা থাকলেই আর ঢাকার রাস্তায় ভাঙা যাবে না ট্রাফিক আইন। রাস্তার নির্দেশক বাতির সংকেত না মানলেই আপনার মোবাইলে মামলার কাগজ চলে যাবে। পুলিশ নয়, এই মামলা করবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই)। দিনক্ষণ ঠিক হলেই ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের ৭টি পয়েন্ট ও ৬১টি ইন্টারসেকশনে চালু হবে এআই ট্রাফিক সিস্টেম।

ভরদুপুরে গুলশান-২ মোড়ে হাতের ইশারায় একাই ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছেন ইসমাইল। যদিও ৮ ঘণ্টার জন্য ৪ জন দায়িত্বে আছেন। প্রখর রোদ আর তীব্র গরমে হাঁসফাঁস এই পুলিশ সদস্যরা একটু স্বস্তির জন্য তাদের দায়িত্ব ভাগ করে নিয়েছেন। কতো বছর এভাবে কাজ করছেন, আর সমস্যাই বা কী?

পুলিশ সদস্যরা বলেন, ‘কষ্ট হলেও তো আমাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে হবে। রোদেই ডিউটি করতে হবে, এছাড়া কোনো সুযোগ নেই। আর আমাদের পর্যাপ্ত ওয়াশরুমও নেই, বিভিন্ন পাবলিক টয়লেটে যেতে হয়।’

ধারণক্ষমতার থেকে ঢাকার রাস্তায় গাড়ির পরিমাণ অনেক বেশি। তার সাথে রিকশা, ভ্যান, অটোরিকশা, মোটরসাইকেলের খামখেয়ালি আচরণ রুখতেই হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ। প্রতিনিয়ত আইন অমান্যের মামলা দিয়েও এই নৈরাজ্য থামানো যাচ্ছে না।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৭টি পয়েন্ট ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৬১টি সংযোগ সড়কস্থলে লাগানো হয়েছে এআই ট্রাফিকিং সিস্টেম।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশে হাত দিয়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না। গুলশান-২ এর সিগন্যাল আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) দিয়ে চালানো হচ্ছে।’

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমরা প্রায় ৬১টি ইন্টারসেকশন শনাক্ত করেছি। যেগুলো এআই ট্রাফিকের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। ইতোমধ্যে আমরা পরামর্শক নিয়োগ করেছি। তারা এগুলোর সম্ভাব্যতা যাচাই করছে।’

রাজধানীতে প্রায় ৫ হাজারের বেশি পুলিশ ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছে। কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার ট্রাফিকিং সিস্টেম চালু হলে হাঁফ ছেড়ে বাঁচবে পুলিশ। একইসঙ্গে পুলিশের স্বাস্থ্য ঝুঁকিও কমবে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, ‘এটি চালু হলে পুলিশের পক্ষে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত সহজ হবে। একইসঙ্গে পুলিশের সংখ্যাও কমে যাবে। আর তখন পুলিশ সদস্যদের রোদে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না।’

ঢাকার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে এর আগেও কয়েকটি প্রকল্প হাতে নিয়েছিলো দুই সিটি কর্পোরেশন। সেগুলোর কয়েকটি বাস্তবায়ন হলেও সুফল পায়নি সাধারণ মানুষ। আবারও হাতের ইশারার ট্রাফিকিং সিস্টেমের ওপর নির্ভর করতে হয়েছে।

যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. এম শামসুল হক বলেন, ‘ঢাকা শহরের ট্রাফিক সিস্টেম এআই-এর জন্য উপযোগী না। আর এআই এমন কিছু না যে সব সমস্যার সমাধান করে দেবে।’

রাস্তার লেন নির্ধারণ করে গাড়ি চলাচলে বাধ্য না করা গেলে এই প্রকল্প কতটুকু আলোর মুখ দেখবে তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে বিশেষজ্ঞদের।