গতকাল শুক্রবার (৩ মে) রাতভর উদ্ধারকাজের পর শনিবার (৪ মে) সকাল থেকে আবারো শুরু হয় ক্রেন দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বগি সরিয়ে নেয়ার কাজ। দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া টাঙ্গাইল কমিউটারের চারটি বগি ক্রেনের সাহায্যে রেললাইনের পাশেই সরিয়ে রাখা হয়। অপরদিকে এক এক করে তেলবাহী ট্রেনের ওয়াগনগুলো উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশনে।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধার তৎপরতায় দেখা দেয় ধীরগতি। দুপুরে আপলাইনে ক্রেন রেখে ডাউনলাইন থেকে ক্ষতিগ্রস্ত দু'টি ইঞ্জিন সরিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। এ সময় প্রায় তিন ঘণ্টা উভয় লাইনে বন্ধ থাকে রেল চলাচল।
রেলওয়ের উদ্ধারকর্মী রবিউল হোসেন বলেন, 'একই লাইনে ক্রেন দিয়ে কাজ করা সম্ভব না। আরেক লাইনে নিয়ে করলে কাজটা করা সম্ভব। আমরা সেটাই করেছি।'
সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় ক্ষতিগ্রস্ত ইঞ্জিন দুটি পার্শ্ববর্তী জয়দেবপুর স্টেশনে নিয়ে গেলে রেল চলাচলের জন্য সচল হয় উভয় লাইন। রেলওয়ে পুলিশ জানায়, তেলবাহী ওয়াগন সরিয়ে নেয়ার কাজ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এবং আপলাইন দিয়ে ঢাকামুখী এবং ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা ট্রেন চলাচল সচল রাখায় উদ্ধারকাজে সময় লেগেছে।
জয়দেবপুর রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সেতাফুর রহমান বলেন, 'একটা লাইন ফ্রি রাখতে গিয়ে আমাদের দীর্ঘ সময় লেগেছে। দুইটা লাইন বন্ধ করে দিয়ে কাজ করলে হয়তো দ্রুত সময়ে ট্রেন উদ্ধার করা যেত।'
এদিকে গাজীপুরের জয়দেবপুরে ট্রেন দুর্ঘটনায় এতে শিডিউল বিপর্যয় হয়েছে কমবেশি ঢাকা থেকে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় সবকটি ট্রেনের। কমলাপুর থেকে ৫টি ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় হয়েছে। কমলাপুর থেকে বেশিরভাগ ট্রেন ছেড়েছে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা দেরিতে। সবচেয়ে বেশি দেরি হয়েছে রংপুর এক্সপ্রেসের। প্রায় ১০ ঘণ্টা পর কমলাপুর ছাড়ে ট্রেনটি।
কাঙ্ক্ষিত ট্রেনের আশায় প্লাটফর্মে পরিবার পরিজনদের সঙ্গে গরমে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকায় ক্ষোভ দেখা গেছে যাত্রীদের মাঝে।
যাত্রীদের একজন বলেন, 'যে কষ্ট হচ্ছে তা ভাষায় বলে প্রকাশ করার মতো না। সকাল ৯টা ১০ মিনিটে ছাড়ার কথা ছিল এখন বিকাল ৪টা বাজে এখনো ছাড়েনি।'
ঢাকা থেকে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলগামী রুটটি চলাচলের জন্য প্রস্তুত থাকলেও ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে জানান কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার।