এই গরমে ওষুধের গুণগত মান কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সে নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন। তবে তীব্র গরমে অতিরিক্ত তাপমাত্রায় ওষুধ সংরক্ষণের বিষয়ে উৎপাদক কোম্পানির পক্ষ থেকে কখনই নতুন কোন নির্দেশনা আসেনি বলে জানিয়েছে ওষুধ বিক্রেতারা।
একজন ওষুধ বিক্রেতা বলেন, 'ওসুধ কোম্পানি থেকে এখনও কোনো দিক নির্দেশনা আসেনি। তাপমাত্র যতই হোক না কেন, আগে যেভাবে ওষুধ আসতো এখনও সেভাবেই আসছে।'
দেশের প্রায় ৯০ শতাংশ ওষুধই ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রুম টেম্পারেচারে সংরক্ষণ করার নিয়ম রয়েছে। বাইরের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রিতে উঠলে ওষুধের দোকানের ভেতরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকভাবেই ৩০ থেকে ৩৫ ডিগ্রি পর্যন্ত ওঠানামা করে। এতে ওষুধের গুণগত মান কমে যাবার পাশাপাশি কার্যকারিতার সময়কালও কমে যেতে পারে বলে মত ওষুধ বিশেষজ্ঞদের।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান খসরু বলেন, 'কার্যকারিতা কমে বা সেল্ফ লাইফ কমে। দুটোই আসলে ওষুদের অনিশ্চয়তা তৈরি করে। খুব কম হয়, তবে কখনও কখনও ওষুধটা ক্ষতিকারক উপাদানে রুপান্তর হতে পারে। যদি নিয়মিত ২৫ ডিগ্রির ওপর একটানা দুই থেকে তিন মাস থাকে তাহলে ওষুধটা নষ্ট হতে পারে।'
ফার্মেসিতে সঠিক তাপমাত্রায় ওষুধ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে উৎপাদক কোম্পানির কোনো দায় না থাকলেও সেটি মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছেন তারা। তবে এই গরমে যে ফার্মেসিই হোক দেখে শুনে ওষুধ কেনার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
ইউনিমেড ইউনিহেলথ ফার্মাসউিটিক্যালসের সহ-মহাব্যবস্থাপক ড. মো. আবু জাফর সাদেক বলেন, 'ওষুধটা সাধারণ ওষুধের মতো আছে কিনা তা দেখে নেবে। ওষুধের গন্ধটা ঠিক আছে কি না সেটা সে দেখে নেবে। এবং সে ওষুধটা সাধারণ বা বাহ্যিক চোখে কোনো অসামঞ্জস্য আস কি না তা দেখে নেবে।'
তবে গরমে ওষুধের সেল্ফ লাইফ বা কার্যকারিতা কমে যাবার অভিযোগ মানতে নারাজ ওষুধ প্রশাসন। তারপরও তীব্র গরমে ওষুধের গুণগত মান কমছে কি না সেটি ক্ষতিয়ে দেখতে সারা দেশে ওষুধের প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন।
তিনি বলেন, '৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এবং এর থেকে ১ বা ২ কম বা বেশি, আর হলো ৭৫ শতাংশ আদ্রতায় ৫ কম বা বেশি। এর মধ্যে যদি ওষুধের গুণগত মান একই রকম থাকে তখন আমরা এ ওষুধের মেয়াদ দেই দুই বছর। সুতরাং কয়েকদিন তাপমাত্র বেড়ে যাওয়াতে ওষুধের সেল্প রাইফের খুব বেশি পরিবর্তন হবে বলে মনে হবে না।'
দেশের নিবন্ধিত ২ লাখ ৩০ হাজার ওষুধের দোকানের মধ্যে কেবল ৭০০টি মডেল ফার্মেসি ও ৫০ হাজার মডেল মেডিসিন শপ। বাকিগুলো ওষুধের সার্বিক মান নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে পিছিয়ে। এক্ষেত্রে ওষুধ কেনার ক্ষেত্রে মডেল ফার্মেসিগুলোকে প্রাধান্য দেওয়ার আহ্বান ওষুধ প্রশাসনের।