দেশে এখন
0

যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদন ‘অনুমাননির্ভর তথ্যে ভরপুর’: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশকে নিয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ২০২৩ সালের মানবাধিকার প্রতিবেদনের বিষয়ে সমালোচনা করেছে বাংলাদেশ। আজ (বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন সাংবাদিকদের কাছে ওই প্রতিবেদন নিয়ে বাংলাদেশের বক্তব্য তুলে ধরেন। প্রতিবেদনটি সরলীকরণ অনুমাননির্ভর তথ্যে ভরপুর বলে মন্তব্য করেছে সরকার।

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনটি দেশের স্বাধীন বিচার বিভাগ ও নির্দিষ্ট কিছু সংবিধিবদ্ধ সংস্থাসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে 'মূল্যায়ন করতে ব্যর্থ হয়েছে। শুধু ব্যর্থই হয়নি বরং অবমূল্যায়ন করেছে। যা এই ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলোর মনোবল ও কার্যকারিতার জন্য ক্ষতিকর।

সেহেলী সাবরীন বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য, সরকারের অনেক উন্নতি ও অর্জন প্রতিবেদনে স্থান পায়নি। অন্যদিকে বিচ্ছিন্ন ও ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হয়েছে।’

তিনি বলেন, 'প্রতিবেদনটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পড়লে এটি স্পষ্ট হবে, এটি পৃথকভাবে রিপোর্ট করা বা কথিত ঘটনাগুলোর পরিপূর্ণ রেফারেন্স দেওয়া হয়নি। এটি সরলীকরণ অনুমাননির্ভর তথ্যে ভরপুর।'

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, খালেদা জিয়া কোনো গৃহবন্দী নয়। তিনি অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। এটা নিয়েও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশ হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, 'গত বছর অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন অজুহাতে ও বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীকে ব্যবহার করে অস্থিরতা, সহিংসতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির বিষয়টি প্রতিবেদনে অনুপস্থিত। বেশিরভাগ স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থাগুলোর (বেনামী উৎসসহ) কাছ থেকে পাওয়া অনুমাননির্ভর তথ্য দিয়ে প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করা। এটি সহজাত পক্ষপাতদুষ্ট, এটি বেশ স্পষ্ট।'

বাংলাদেশ সরকার অবশ্য বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রশাসনের অব্যাহত আগ্রহের প্রশংসা করেছে।

সেহেলী সাবরীন বলেন, ‘আমরা যতই প্রত্যাশা করি না কেন, বিশ্বের কোথাও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিখুঁত নয়। যদিও মানবাধিকার কোনো শ্রেণির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, তবে আর্থ-সামাজিক সীমাবদ্ধতার কারণে প্রায়ই এসব অধিকার আদায়ের গতিকে সীমাবদ্ধ করে। বাংলাদেশ সরকার তার নাগরিকদের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। ‘প্রকৃতপক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে।'

তিনি বলেন, 'বরাবরের মতোই প্রতিবেদনে আইনগত কর্মকাণ্ডের চিত্র ভুলভাবে তুলে ধরা হয়েছে। একইভাবে প্রতিবেদনে শ্রম অধিকার ইস্যু, বিশেষত ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধন ও কার্যক্রম সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি বিষয় চিহ্নিত করা হয়েছে। যা বেশ কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় বা বহুপক্ষীয় প্ল্যাটফর্মে সংশ্লিষ্ট মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে।'

প্রতিকার ও জবাবদিহি নিশ্চিতে নেওয়া প্রশাসনিক ও বিচারিক পদক্ষেপের বিস্তারিত বিবরণ না দিয়ে প্রতিবেদনে মানবাধিকারের পদ্ধতিগত অপব্যবহারের অংশ হিসেবে বেসরকারি ব্যক্তি বা সংস্থার দ্বারা সংঘটিত ঘটনাগুলো প্রকাশের প্রবণতা বজায় রাখা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।