যে কয়টি প্রকল্প আগামী বছরগুলো বদলে দিবে কমলাপুরের চেহারা তার অন্যতম প্রথম মেট্রোরেলের এই মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিত প্রকল্প।
মতিঝিল স্টেশন থেকে শাপলা চত্বর আর কমলাপুর বাজার সড়ক ধরে কমলাপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত ১.৬ কিলোমিটার এ প্রকল্পের এলাকায় এখন শুধুই ভারী ভারী যন্ত্রাংশের উপস্থিতি। শক্তিশালী ক্রেন দিয়ে মতিঝিল অংশের দিকে যেমন চলছে মেট্রোরেলের উড়ালপথ তৈরির প্রস্তুতি তেমনি কমলাপুর রেলস্টেশনের সামনে দাড়িয়ে গেছে সবশেষ মেট্রো স্টেশনের প্রাথমিক অবকাঠামো। মোট ৩০টি খুটির উপর এখানে নির্মাণ হবে কমলাপুর মেট্রো স্টেশন, যার বেশিরভাগেরই নির্মাণ কাজ শেষ। এই স্টেশন নির্মাণ হয়ে গেলে কমলাপুরবাসী ঠিক এর নিচেই পাবে ৬ লেনের চওড়া সড়ক। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সে প্রকল্প যাতে বাঁধাগ্রস্ত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই নির্মাণ হচ্ছে এই স্টেশন।
এমআরটি ৬ এর উপ প্রকল্প ব্যবস্থাপক মাহফুজুর রহমান বলেন, 'অন্য সংস্থার সাথে সমন্বয় করে আমরা মেট্রো স্টেশনের নিচে ৬ লেনের রাস্তা করবো।'
মূলত বেশকিছু চ্যালেঞ্জ মাথায় রেখে নির্মাণ করা হচ্ছে মেট্রোরেলের বর্ধিত এই অংশের নির্মাণ কাজ। বিশেষ করে শাপলা চত্বরের সৌন্দর্য্য রক্ষা ও মতিঝিল বাজার থেকে কমলাপুর পর্যন্ত সড়কের সুবিধা ধরে রাখা। এটি করতে গিয়ে ঠিক এইখানে কয়েকবার বাক নিয়েছে উড়াল এই পথটি। যেটি দেখতে অনেকটা ইংরেজি 'এস' অক্ষরের মত।
মূলত ৩টি ভাগে কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিত অংশের কাজটি করা হচ্ছে। এখানে মতিঝিলের কাছাকাছি অংশে খুটি ও খুটির ক্যাপগুলো বসে যাওয়ার পর চলছে উড়ালপথ বসানোর প্রস্তুতি। অপরদিকে স্টেশনের কাজও চলছে পুরোদমে। মাঝের অংশটুকুই ছিল সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং কারণ ঘিঞ্জি এই লোকালয়ের মধ্যদিয়ে মেট্রোর লাইন নিতে গিয়ে প্রায় ৪৬টি স্থাপনা ভাঙতে হয়েছে। তবে সব মিলিয়ে মেট্রো কর্তৃপক্ষ বলছে মাটির নিচের কাজ শেষ করে তারা এখন মনোযোগী উপরের অবকাঠামো নির্মাণের কাজে।
উপ প্রকল্প ব্যবস্থাপক আরও বলেন, 'যে অংশ আমরা দেরি করে পেয়েছিলাম সেখানে এখন ফাউন্ডেশনের কাজ চলছে। পাইলিং শেষের পথে।'
কমলাপুর নাগাদ এই অংশের ওপর নির্ভর করছে মেট্রোরেলের ভবিষ্যৎ। কারণ মেট্রো কর্তৃপক্ষ আশা করছে, কমলাপুর বর্ধিত অংশ চালু হলে যাত্রীসেবার কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে পারবে তারা।
মেট্রোরেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, 'খুব বেশিদিন হয়তো আমাদের অপেক্ষা করতে হবে না। আমাদের ৫ লাখ যাত্রী হয়ে যাবে। আর কমলাপুর পর্যন্ত শুরু হলে ৬ লাখের উপরে যাবে যাত্রী। আমাদের যে ১০০ কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল তা পূরণ করতে পারবো। তখন বিজ্ঞাপন থেকে ১০ কোটি এবং টিকেট থেকে ৯০ কোটি টাকা আসবে।'
মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কমলাপুর মেট্রো স্টেশনের নিচে এসে যোগ হবে বিমানবন্দর থেকে আসা মেট্রোরেলের লাইন ১ এর স্টেশন। তারা বলছে, কমলাপুর মেট্রো স্টেশনের উত্তর দিকে আরও একটু জায়গা পেলে আসা যাওয়ার লেন পরিবর্তনের জন্য সিজার ক্রসিং নির্মাণ করতে পারবে মেট্রোরেল। নাহলে আগারগাঁও মেট্রো স্টেশনের মত এই কমলাপুর স্টেশন থেকেও একপাশ থেকেই উঠানামা করতে হবে যাত্রীদের।