দেশে এখন
0

বগুড়া পৌরসভার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে টোল আদায়ের অভিযোগ

নির্দিষ্ট কোন সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ড না থাকলেও সড়ক ইজারা দিয়ে চালকদের কাছ থেকে টোল আদায় করছে বগুড়া পৌরসভা। ট্রাফিক বিভাগ বলছে, সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা করায় সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। সড়ক ইজারা বেআইনি দাবি সড়ক বিভাগের। আর ইজারা বন্ধ রেখেও সড়কে শৃঙ্খলা ফেরে না বলছে পৌরসভা।

বগুড়া শহরের ঘোড়াপট্টি ও ইয়াকুবিয়া মোড়ে সড়কের ওপর সবসময় পার্কিং করা থাকে সিএনজি চালিত অটোরিকশা। সড়কের একটা অংশ দখল করে যাত্রী ওঠানামা করায় সংকীর্ণ সড়কে যানবাহন চলাচলে ধীরগতির সাথে যুক্ত হয় যানজটের ভোগান্তি।

পার্কিংয়ের জন্য নির্দিষ্ট কোন জায়গার ব্যবস্থা না করে চলতি অর্থবছরের জন্য সিএনজি স্ট্যান্ড হিসেবে বগুড়া-শেরপুর সড়ক ১০ লাখ ২০ হাজার ৩০০ এবং বগুড়া-গাবতলি সড়কের চেলোপাড়ায় ১৭ লাখ ৮০ হাজার টাকায় ইজারা দিয়েছে পৌরসভা। ইজারা না হওয়ায় খাস কালেকশন করা হচ্ছে মাটিডালি সড়কের দত্তবাড়ি, গোহাইল রোড, স্টেশন রোড ও মহাসড়কের চারমাথায় অটোচালকদের কাছ থেকে। চালকদের অভিযোগ, পৌর টোল দিলেও পৌরসভা থেকে গাড়ি পার্কিংসহ কোন ব্যবস্থা রাখেনি পৌরসভা।

সিএনজি চালকরা বলেন, আগে ৫ টাকা দিতাম এখন ১০ টাকা দেয়া লাগে। তবুও কোন সুযোগ সুবিধা নাই। এখানে কোন স্ট্যান্ড নাই, ট্রাফিক সার্জেন্টরা খুব অত্যাচার করে। নির্দিষ্ট স্ট্যান্ড না থাকায় সাধারণ মানুষেরও খুব হয়রানি হচ্ছে।

অথচ সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর ৪৭ ধারায় নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া মোটরযান পার্কিংয়ের অপরাধে অনধিক ৫ হাজার টাকা জরিমানার বিধান থাকলেও সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা এসব মোটরযানের বিরুদ্ধে সে আইনের তেমন প্রয়োগ দেখা যায় না।

রাস্তা দখল করে গড়ে ওঠেছে অবৈধ সিএনজি স্ট্যান্ড। ছবি: এখন টিভি

এদিকে পৌরসভা কোনভাবেই সড়ক ইজারা দিতে পারে না দাবি করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ বলছে, এ নিয়ে একাধিকবার কথা বলেও কোন কাজ হয়নি। আর ট্রাফিক বিভাগ বলছে নিয়ম অমান্য করে পৌরসভার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকছে এসব মোটরযান।

ট্রাফিক পরিদর্শক মাহবুবুল ইসলাম খান বলেন, 'পৌরসভার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে রাস্তায় সিএনজিগুলো রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে। আগে দেখতাম এক লাইন করে দাঁড়াতো। দিনের পর দিন গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই এখন দুই-তিন লাইন করে দাঁড়িয়ে থাকে।'

বগুড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান বলেন, 'পৌরসভা কর্তৃপক্ষ কিছু কিছু জায়গায় ইজারা দিয়েছে। এ বিষয়গুলো নিয়ে আমরা মিটিংয়ে আলোচনাও করেছি। যেহেতু সড়ক বিভাগের জায়গায় আমরা ইজারা দেইনি, তাই অন্য কোন কর্তৃপক্ষ দিতে পারে না।'

রাস্তা দখল করে গড়ে ওঠা একেকটি সিএনজি স্ট্যান্ড যানজট আর শহরবাসীর ভোগান্তির অন্যতম কারণ।

পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম বাদশা বলেন, 'এর আগে ইজারা বন্ধ রেখেও স্ট্যান্ড ও চাঁদাবাজি বন্ধ রাখতে না পেরে আবারও ইজারা দিয়েছি। কারণ এতে পৌরসভা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।'

বিভিন্ন সূত্র বলছে বগুড়ার সড়ক-মহাসড়কে অন্তত ২০ হাজার সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলে। যাদের কাছ থেকে ১০ টাকা থেকে ৩৫ টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করা হয়। এতে মাসে সিএনজি চালকদের শুধু চাঁদা বাবদ গুণতে হচ্ছে অন্তত ২ কোটি টাকা।