আসছে ঈদে এখনও শুরু হয়নি ঘর ফেরা মানুষের যাত্রা। তবুও অতিরিক্ত লাভের লোভ জেঁকে বসেছে বাস চালকদের। কাউন্টারে যাত্রী না মেলায় মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের আগে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করে বাসগুলো। দেখার কি কেউ নেই?
বাস চালকরা কতটুকু শোনেন পুলিশের কথা? পুলিশের শত বারণের পরও আবার ফ্লাইওভারে উঠে অপেক্ষা করে যাত্রীর জন্য। আর ঈদে ঘর ফেরা যাত্রীরা প্রথমেই ঢাকার প্রবেশমুখগুলোয় যানজটে পড়েন।
মহাসড়কে বাড়ছে গাড়ির সংখ্যা। ছবি: এখন টিভি
মহাসড়কে তীব্র যানজটের কারণ খতিয়ে দেখতে বের হয়ে এলো বেশ কিছু বিষয়। ঢাকা থেকে নরসিংদী যেতে পথে যানজটের প্রধান কারণ- এই রুটে বেশ কয়েকটি স্থানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয় ঈদে ঘরে ফেরা যাত্রীদের।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ধীর গতির গাড়ির কারণে সব থেকে বিপাকে পড়তে হয় দ্রুত চলা গাড়িগুলোকে। পায়ে চালিত রিক্সা, ভ্যান, ব্যাটারি চালিত রিক্সা হরহামেশাই দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে এ মহাসড়ক।
মহাসড়কে চলছে ব্যাটারি চালিত রিক্সা। ছবি: এখন টিভি
পথে যেতে যেতে যানজটের আরও বেশ কিছু সম্ভাব্য স্থান খুঁজে পাওয়া গেছে। পুলিশের সামনেই শৃঙ্খল রাস্তায় হরহামেশায় বাস চালকদের উচ্ছৃঙ্খল দাপট দেখা গেল।
কাঁচপুর থেকে যানজটে পড়া গাড়িগুলোকে এই পথ ধরে যেতে কখনও কখনও ২ থেকে আড়াই ঘণ্টা যানজটে ভুগতে হয়।
একজন বাসচালক বলেন, 'শেখেরচরে যে মালামাল আনা নেয়া করে, সেখানেই জ্যামের শুরু হয়। এছাড়াও রিক্সাগুলো রাস্তায় চলে। রাস্তা ও ফুটপাতের ওপর কাঁচাবাজার হওয়াতে রাস্তাটা ছোট হয়ে গেছে। গাড়ি যেতে পারে না।'
শুধু এই পথই নয়, এমন আরও ১৫৫টি সম্ভাব্য যানজটের স্পট নির্ধারণ করেছে কর্তৃপক্ষ। যার মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে ৪৮টি, ঢাকা-উত্তরবঙ্গ মহাসড়কে ৫২টি, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ৬টি, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ৪১টি ও ঢাকা-পাটুরিয়া-আরিচা মহাসড়কে ৮টি সম্ভাব্য যানজটের স্থান রয়েছে। সঙ্গে পুরনো ফিটনেস বিহীন গাড়ির চাপে নাজেহাল হয়ে পড়ে মহাসড়ক।
এ সমস্যা কী পদক্ষেপ বিআরটিএর?
জানতে চাইলে বিআরটিএ চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, 'সারাদেশে ছোট-বড় ১৫৫টি স্পট চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে বড় স্পট খুবই কম। ৩২টি পয়েন্টে সিসি ক্যামেরাসহ আমাদের মনিটরিং আছে। আনফিট গাড়িগুলো যেন ঈদ উপলক্ষ্যে রাস্তায় তুলতে না পারে, সেদিকে কঠিন নজরদারি রাখা হবে। যেসব স্থানে যানজট বেশি থাকে এবং যেখানে দুর্ঘটনা বেশি হয় সেখানে জেলা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করে মনিটরিং বেশি করা হবে।'
মহাসড়কে চলছে নির্মাণ কাজ। ছবি: এখন টিভি
নির্মাণাধীন রাস্তার কারণে যানজটে নাকাল থাকতে হয় অনেক সময়। তাই আগেভাগে চলাচল উপযোগী রাস্তা নির্মাণ কাজ শেষ করার নির্দেশনা রয়েছে সড়ক বিভাগের। ঢাকা বাইপাস, নবীনগর-চন্ত্রা সড়ক,ঢাকা-জয়দেবপুর ময়মনসিংহ করিডোর সড়ক, ঢাকা-চন্দ্রা-এলেঙ্গা, এলেঙ্গা-বগুরা-রংপুর, ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-গোপালগঞ্জ-খুলনা ও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের নির্ধারিত অংশগুলোর যানজটে নিরসনে পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার নির্দেশ সড়ক বিভাগের।
হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি শাহাবুদ্দিন খান বলেন, 'অস্থায়ী বাজারগুলো উঠিয়ে দিলেও অনেকসময় আবার এসে বসে। এগুলোতে আমরা অভিযান চালাচ্ছি। আশা করি, ঈদের আগে এগুলো সম্পূর্ণ পরিষ্কার করবো। ঈদযাত্রায় যেন কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয়, তারা যেন নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারে তার জন্য কাজ করছি আমরা।'
নিরাপদ সড়ক দাবিতে আন্দোলনে থাকা অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন বলছেন, কিছুটা হলেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে সমন্বয় করে কাজ করার আহ্বান তার।
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, 'শতভাগের টার্গেট থাকলে সেখানে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ সফল হয়েছি।'
ঈদ সামনে রেখে প্রস্তুতির কমতি কখনও ছিল না কর্তৃপক্ষের। তবুও বিশৃঙ্খল সড়কে হয়রানি কেন পোহাতে হয়? সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে সাধারণ মানুষ।