আমদানি করা কাপড়ের পাইকারি বাজার হওয়ায় এখানে বেচাবিক্রি শুরু হয় রমজানের এক মাস আগে থেকেই। কাতান, লিনেন, জামদানি, সুতি, শিফন ও প্রিন্ট কাপড়সহ দেশি-বিদেশি সব ধরনের কাপড় পাওয়া যায় এখানে।
ফ্যাশন আর নানা ডিজাইনের পোশাক পাওয়ার জন্য বন্দর নগরীর নারীরা প্রথমেই এখানে ছুটে আসেন। এক ছাদের নিচে সব ধরণের পোশাক পাওয়া যায়। দামও তুলনামুলক সস্তা। ক্রেতারা জানান, ঈদের সময় মার্কেটে বেশি ভিড় থাকে। তাই ঝামেলা এড়াতে আগেভাগেই কেনাকাটা সেরে ফেলছেন। যাচাই বাছাই করে দেখেশুনে নেওয়া যায় বলে আগেভাগে পোশাক কিনতে এসেছেন তারা।
টেরিবাজারে ছোটবড় মিলে ১১০টি পোশাকের মার্কেট আছে। যেখানে দোকানের সংখ্যা প্রায় তিন হাজার। এবার ঈদুল ফিতরে বেচাবিক্রির লক্ষ্য ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫শ' থেকে ২ হাজার কোটি টাকা।
গেল এক দশকে টেরিবাজারে ব্যবসার ধরনে পরিবর্তন এসেছে। গড়ে উঠেছে ৫০টির মত বেশি ওয়ান স্টপ বড় দোকান। যেখানে একই ছাদের নিচে মিলছে সব ধরনের পোশাক, অলংকার, কসমেটিকস, জুতাসহ নানা পণ্য। এসব দোকানে প্রতিদিন ৫ থেকে ৮ লাখ টাকা বিক্রি হচ্ছে। যা ঈদের আগে দ্বিগুণ, তিনগুণ গিয়ে দাঁড়ায়।
বলা হয়ে থাকে ঈদ, পূজা বা অন্য যেকোনো উৎসবে কোন পোশাকটি হাল আমলের পোশাক বা জনপ্রিয় হবে তা নির্ধারণ করে টেরিবাজারের ব্যবসায়ীরা। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এখানকার ব্যাবসায়ীরা দেশিয় ব্র্যান্ডের পাশাপাশি ভারত, পাকিস্তান, দুবাইসহ, বিভিন্ন দেশ থেকে পোশাক সংগ্রহ করেছেন। ঈদ উপলক্ষে ছোট-বড় দোকানগুলো ৩০ থেকে ৫০ লাখ আর মেগা শপগুলো কোটি টাকার উপরে বিনিয়োগ করেছেন।
টেরিবাজার ব্যাবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আহমদ হোছাইন বলেন, 'আমাদের লাভ কম কিন্তু বিক্রি বেশি। বাজারের সবাই যে বড় ব্যবসায়ী তা কিন্তু না। এখানে ছোট ব্যাবসায়ীও আছে। এখানে আসলে পছন্দসই জিনিস পাওয়া যাবে।'
পছন্দের পোশাক কেনার পর এ বাজার থেকে সেলাইও করা যাব। সেখানেও এখন ব্যস্ততা বেড়েছে। টেরিবাজার ঘিরে কয়েকশ' টেইলার্সের দোকান গড়ে উঠেছে। ঈদের আগে ডেলিভারি দিতে হবে। তাই নির্দিষ্ট সময়ে ডেলিভারি দিতে হবে বলে দম ফেলার ফুসরত নেই কারিগরদের।
আমদানি পোশাক ও থান কাপড়ের জন্য বিখ্যাত এ বাজারে উৎসব আর সামাজিক অনুষ্ঠান মিলিয়ে সারা বছর প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার পোশাক বেচাকেনা হয়।