দেশে এখন
0

বেইলি রোড ট্রাজেডিতেও টনক নড়ছে না

মাত্র তিনদিন আগের দগদগে স্মৃতি নিয়ে বেইলি রোডে দাঁড়িয়ে আছে পুড়ে যাওয়া গ্রিন কোজি ভবন। এই ঘটনার পর আবাসিক ভবনে রেস্তোরাঁ ব্যবসার বৈধতা নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা হলেও বিকারহীন ঐ এলাকার অন্যভবনগুলো। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের পাশেই মিললো অনিয়মের ছড়াছড়ি।

বেইলি রোডের আগুনে পুড়ে যাওয়া ভবনের পাশের আরেকটি আবাসিক ভবনেও রয়েছে কয়েকটি রেস্তোরাঁ। গিয়ে দেখা গেল গ্যাস সিলিন্ডার দিয়ে চলছে রান্নার কাজ। দেখে বোঝার উপায় নেই মাত্র তিনদিন আগে পাশেই ঘটে গেছে এতো বড় ট্রাজেডি।

আবাসিক হওয়াতে লাইনের গ্যাস না পাওয়াকে অজুহাত হিসেবে দেখালেন রেস্তোরাঁর দায়িত্বরতরা। বলেন, 'আমাদেরকে গ্যাস দিচ্ছে না। আগে থেকেই আমরা সিলিন্ডার ব্যবহার করি।'

দুর্ঘটনার পাশের ভবন যখন নিয়মের মধ্যে আসেনি; তখন শহরের অন্য ভবনের চিত্র সহজেই অনুমান করা যায়। এলাকাবাসী ও এখানকার নিয়মিত ভোক্তাদের চাওয়া ঝুঁকিমুক্ত রেস্তোরাঁ। সেইসঙ্গে আবাসিক ভবন থেকে এসব রেস্টুরেন্ট সরানোর দাবি তাদের।

স্থানীয়রা বলেন, 'প্রতিটি ফ্লোরের মালিকদের জেলে ঢুকানো দরকার। তারা কেন এ ব্যবস্থা করে দিবে। একটা বারান্দা পর্যন্ত নেই। চারিদিক প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। আগুন ছাড়াও যেখানে একদিন টিকে থাকা সম্ভব নয়।'

দুর্ঘটনা কবলিত পাশের ভবনের এক রেস্তোরাঁয় গ্যাস সিলিন্ডার দিয়ে চলছে রান্নার কাজ

এদিকে বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডে ৪৬ জন মারার যাওয়ার বিষয়ে হাইকোর্টে একাধিক রিট দায়ের করা হয়। রিটে আবাসিক এলাকায় যত্রতত্র রেস্টুরেন্ট না রাখাসহ কয়েকটি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এছাড়া বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে একটি লিগ্যাল নোটিশ দেয়া হয়। আগামীকাল রিটের শুনানির জন্য দিন ঠিক করা হয়েছে।

রিটকারি আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ বলেন, 'আবাসিক এলাকায় যেন রেস্টুরেন্টসহ কোন বাণিজ্যিক কার্যক্রম না হয়; সেটা বন্ধের জন্য আমি এ রিট করেছি।'

নিরুপায় হয়ে সমিতির সাথে সরকারি সংস্থাগুলোর সমন্বয়ের অভাবকে দায়ী করছেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান। বলেন, 'কোন সরকারি অধিদপ্তর এ বিষয়ে সমন্বয় করার জন্য আমাদের ডাকে না এবং বড় বড় প্রতিষ্ঠানের মালিকরাও আমাদের কাছে আসে না।'

সচেতন মহলের দাবি ফায়ার সার্ভিস ও সিটি করপোরেশনের অনীহা ঝুঁকিতে ফেলে দিচ্ছে নগরবাসীকে।

পরিবেশবিদ ড. আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, 'যেসব বিল্ডিংয়ের অনুমোদন আছে সেগুলোতে রাজউক, ফায়ার সার্ভিস ও সিটি করপোরেশনের টিক চিহ্ন থাকতে হবে। আর যেগুলোর অনুমোদন নাই সেগুলোতে ক্রস দিতে হবে।'

বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির তথ্য বলছে, রেস্তোরাঁ খাতে কাজ করে ৩ লাখ শ্রমিক। যার ৯০-৯৫ শতাংশই অদক্ষ।