দেশে এখন
0

ঝুঁকিপূর্ণ ভবন হওয়ায় মালিককে তিনবার নোটিশ দেয়া হয়: ফায়ার ডিজি

রাজধানীর বেইলি রোডে বৃহস্পতিবার রাতে ভয়াবহ আগুন লাগা ভবনটির মালিকপক্ষকে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে তিনবার নোটিশ দেয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দীন।

শুক্রবার (১ মার্চ) দুপুরে বেইলি রোডের আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত নারী ও শিশুসহ ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসাধীন অনেকের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ​ ও শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।

ভবনটির কোনো ধরণের কমপ্লায়েন্স ছিল না উল্লেখ করে ফায়ার ডিজি বলেন, ‘নিহতদের বেশিরভাগই অক্সিজেন স্বল্পতায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। ভবনটিতে একাধিক রেস্টুরেন্ট ছিল। এছাড়া সিলিন্ডারও ছিল অনেক। এজন্য ভবনটি ছিল অগ্নিচুল্লির মতো। ফলে দাউ দাউ করে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। যারা মারা গেছেন তারা আগুনে দগ্ধ না হয়ে অক্সিজেন স্বল্পতায় মারা যেতে পারেন।’

তিনি বলেন, ‘আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও তদন্ত করে দেখব, এ কাজে কারো কোনো গাফিলতি আছে কিনা। এরই মধ্যে আমরা পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। এর মাধ্যমে আমরা জানতে পারব কীভাবে আগুন লেগেছে। এ ঘটনার পেছনে কারো হাত  আছে কিনা, যারা থাকবেন তাদের বিরুদ্ধে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের উত্তরে মো. মাইন উদ্দীন বলেন, ‘ভবনটি বাণিজ্যিক না আবাসিক এ ব্যাপারে শুধু রাজউক বলতে পারবে, আমরা শুধু ফায়ার রিলেটেড বিষয়গুলো দেখে থাকি।’

তিনি বলেন, ‘এ বিল্ডিংয়ে কমপ্লায়েন্স নেই, ফায়ার সেফটি প্লান্ট ছিল না এবং আমরা দুই একটি ফায়ার এক্সটিংগুইশার দেখেছি। সবচেয়ে বড় কথা, এখানে একটি মাত্র সিঁড়ি এবং একটায় মাত্র পথ। যে রুমে মানুষজন আশ্রয় নিয়েছিল, সেখানে একটিও জানালা নেই। এ ভবনের চারতলায় এখনো সিলিন্ডার আছে, আপনারা চাইলে দেখতে পারেন।’ 

ভবন মালিককে নোটিশ দেয়া প্রসঙ্গে ফায়ারের ডিজি বলেন, ‘এ ভবনকে ইতিপূর্বে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে এমন অনেক ভবন রয়েছে, সবাইকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি, যারা ব্যবসা করছেন বা আবাসিকভাবে থাকছেন সবাইকে ফায়ারের বিষয়ে সচেতন  হতে হবে।’

আগুনের সূত্রপাত নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের ধারণা আগুনের সূত্রপাত হয়েছে নিচতলা থেকে।  আমরা তদন্ত করলে সঠিকটা বলতে পারব । প্রাথমিকভাবে আমাদের মনে হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে হতে পারে।’

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে বেইলি রোডের ‘কাচ্চি ভাই’ রেস্টুরেন্টের ভবন থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। রাত ৯টা ৫০ এ আগুন লাগার খবর পাওয়ার পর ৯টা ৫৬ মিনিটে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় ফায়ার সার্ভিস। দুই ঘণ্টার চেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিস।

সর্বশেষ খবর, নিহত ৪৬ জনের মধ্যে ৪৩ জনের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে ৩৯ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে অন্তত ৭৫ জনকে।

ইএ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর