ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা উৎসব মানেই মুখরোচক কিংবা প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার আয়োজনে গুরুত্ব পায়। দুধ-ডিমের তৈরি খাবার কিংবা মাংস অথবা মিষ্টান্ন।
তাই তো বাজারেও এসব পণ্যের চাহিদা থাকে শীর্ষে। ব্যবসায়ীরাও সুযোগে লুফে নেন লাভের সমাধান। ডিম, দুধ, মুরগি কিংবা মাংস বরাবরই এসব পণ্যের দামে থাকে আগুন, আর সে আগুনে পবিত্র শবে বরাত ঘিরে ঘি ঢেলেছেন ব্যবসায়ীরা। সিয়াম সাধনার ১৫ দিন আগে ধর্মীয় এই আনুষ্ঠানিকতাকে কেন্দ্র করে আমিষ জাতীয় খাবারের আরেকবার দাম বেড়েছে।
সপ্তাহখানেক আগে থেকেই যেখানে চড়া গরুর মাংসের দর, হিসাবের খাতা বলছে শবে বরাতের আগে পুনরায় বেড়েছে মুরগির দাম। গরুর মাংস ৭৫০ টাকায় আর ১০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০-২১৫ টাকায়। তবে আগের চড়া দামেই স্থিতিশীল দেখা গেছে ডিমের বাজার।
ক্রেতারা বলেন, ‘শবে বরাতের জন্য মাংস নিতে আসছিলাম, আগে ছিল ৭০০ টাকা কেজি কিন্তু এখন বলতেছে ৭৫০ টাকা কেজি। আমার কাছে মনে হচ্ছে, মাংসের দাম একটু বেশি।’
এক মুরগি ব্যবসায়ী বলেন, ‘গত সপ্তাহের থেকে এই সপ্তাহে ব্রয়লার ৫ থেকে ১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।’
এসব আমিষ জাতীয় খাবার গ্রহণের পর যদি হালুয়া, সেমাই কিংবা ফিরনি খেতে চান, তাহলে পড়তে পারেন পকেটে টান। কেননা এখানেও গুণতে হবে বাড়তি দাম। সেমাই, দুধের বাড়তি দামের পাশাপাশি সপ্তাহ ব্যবধানে বেড়েছে চিনি, ছোলা ও ডালের দাম।
এদিকে বৃহস্পতিবার সরকারি লাল চিনির দাম বাড়ানোর কয়েক ঘণ্টা পরই সিদ্ধান্ত বদলায় সরকার। তবে সিদ্ধান্ত বদল হলেও এই দাম বাড়ানোর প্রজ্ঞাপণ বাজারে অন্যান্য চিনির দরে ফেলেছে ব্যাপক প্রভাব। পাইকারি পর্যায়ে খোলা চিনির দাম বস্তাপ্রতি ২০০-২৫০ টাকা বাড়িয়েছে ব্যবসায়ীরা, অভিযোগ ক্রেতাদের।
এক মুদি দোকানি বলেন, ‘চিনি গতকাল আমরা বিক্রি করেছি ১৩৭ টাকা করে, আজকে বিক্রি করছি ১৪২ টাকা। এই একরাতের ব্যবধানে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।’
আরেক দোকানি বলেন, ‘১ কেজি ছোলাতে ৫-১০ টাকা, ১ কেজি মুগডালে ১০-১২ টাকা, ১ কেজি বুটের ডালে ১৫-২০ টাকা, ১ কেজি খেসারিতে বেড়েছে ২০ টাকা করে।'
সেমাই, হালুয়া অথবা মাংস দিয়ে আটার রুটি খাওয়ার স্বাদ ভুলতে হবে বাজারে গেলে। আটা, ময়দা কিংবা সুজির বাজার এখন বেশ চড়া। বছর ব্যবধানে যা প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে, যা স্থিতিশীল কয়েক সপ্তাহ ধরে। দাম বৃদ্ধির পেছনে বিক্রেতাদের রয়েছে নানা অজুহাত, আর বাজারে আসা ক্রেতাদের যেন মাথায় হাত।
ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আছে আবার কিছু কাস্টমারের দোষ আছে। আমার দরকার দুই প্যাকেট আমি ১০ প্যাকেট নিয়ে রেখে দিলাম।’
সবজির বাজারেও স্বস্তি নেই। একদিকে যাচ্ছে শীতের সবজি, অন্যদিকে আসছে গরমের বিভিন্ন সবজি। এই দুইয়ের দোটানায় পকেট খালি হচ্ছে শুধু ক্রেতার। বাজারে শিম ৪০ টাকা, ফুলকপি ৪০ টাকা, শসা ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, টমেটো ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।