উত্তরা-মতিঝিল মেট্রো পুরোদমে চালু হওয়ার পর এবারই প্রথম এলো একুশ। কালো পাঞ্জাবি, সাদা শাড়ি আর শোকের ব্যাজ পড়া এত যাত্রী এবারই প্রথম দেখলো ঢাকার মেট্রোরেল। সরকারি এ ছুটির দিনে পরিষেবা চালু রাখা মেট্রোতে সবচেয়ে ভিড়ও দেখা গেছে শহীদ দিবসের স্মৃতিবিজড়িত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেট্রো স্টেশনে।
সূর্য দুপুরের ভাগে গড়ানোর পর থেকে প্রতিটি কামরা ভরে আসতে থাকে মানুষে। উত্তরা উত্তর থেকে মতিঝিলে শেষ গন্তব্য হলেও মানুষের এ অভিযাত্রা থামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেট্রো স্টেশনে। জাতীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা, বইমেলার ঘোরাঘুরি সঙ্গে মেট্রোরেলে চড়াটাও আনন্দের উপলক্ষ্য হয়েছে মানুষের কাছে।
উত্তরা উত্তর থেকে আসা মেট্রোরেলের যাত্রীরা বলেন, 'অনেক সময় ইচ্ছা হয় কিন্তু বাচ্চা নিয়ে এই অবস্থায় আসা হয় নাই। মেট্রোরেল আছে বলেই আজকে আসলাম শহীদ মিনারে।'
আরেকজন বলেন, 'আমরা তো শর্ট টাইমে আগে উঠলে সিএনজিতে অথবা বাসে যেতাম এখন মেট্রোরেলে খুব সুবিধা পাচ্ছি।'
একুশের মেট্রোযাত্রায় শিক্ষার্থীদের একটা বড় অংশগ্রহণ দেখা গেছে। প্রভাতফেরি শেষ করে মেট্রোরেলে শহর দেখার আনন্দ ভাগাভাগি করে বেড়িয়েছে বন্ধুরা মিলে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, 'আমরা শহীদ মিনার যাবো এবং মেট্রোরেল বাংলাদেশে নতুন হয়েছে তাই ঘুরতে এসেছি। এরপর বই মেলায় যাবো।'
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, 'ফ্রেন্ডরা মিলে এসেছি এখানে আমরা তো সবসময় আসার সুযোগ পাই না। আজকে আসার সময় পেলাম এখানে, বইমেলা দেখতে পেলাম।'
প্রযুক্তিগত নিরাপত্তায় ফুল, বেলুন নিষেধ মেট্রোরেলে। তবে সচেতনতা দেখা গেছে এখানেও, নিরাপত্তা বাহিনীর পর্যবেক্ষণে ধরা পড়া সবাই ফুল ছেড়ে গেছে স্টেশনে ঢোকার আগে।
যাত্রীরা বলেন, 'এটা একটা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জায়গা। ফুল, টিস্যু, পানির বোতল এগুলো না নেওয়ায় ভালো।'
আরেকজন বলেন, 'এখানে নিষেধাজ্ঞা আছে। সরকার অবশ্যই ভালোর জন্যই বলেছে। তারা চাচ্ছে না মেট্রোর পরিবেশ খারাপ হোক। তারা চাচ্ছে সাধারণ জনগণ সচলভাবে যাতায়াত করুক।'
সব মিলিয়ে একুশের দিনের এ মেট্রোকে বলা যায় `একের ভেতর অনেক'।
এটাই তো সত্যি, স্বাধীনতা নামের যে মহীরুহের জন্ম ১৯৭১ এ, তার বীজ বোনা হয়েছিলো বায়ান্নতে। একুশের দিনে এখানে আগত মানুষেরা এটাই বললেন, দ্রোহের শক্তি দেখানো সে পূর্বপুরুষদের হাত ধরেই আজকের বাংলাদেশ, আজকের এই এগিয়ে যাবার এ অভিযাত্রা।