বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের মধ্যমপাড়া গ্রাম। মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ যুদ্ধ পরিস্থিতির সাক্ষী এ গ্রামের মানুষ দেখেছে, উড়ে আসা মর্টারশেলের গোলার ভয়াবহ বিস্ফোরণ আর মুহুর্মুহু গোলাগুলি। আতঙ্কিত মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পরিচিত বা স্বজনদের কাছে চলে গিয়েছিলেন।
তবে কয়েকদিন ধরে সীমান্ত পরিস্থিতি শান্ত হওয়ায় বহু মানুষ ঘরে ফিরেছে। জীবনযাত্রা অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে। দৈনন্দিন কাজে ব্যস্ততা বাড়ছে। হাটবাজারে মানুষের আনাগোনা বেড়েছে। তবে এখনও উৎকন্ঠা কাটেনি।
স্থানীয়রা বলেন, সীমান্তের বাসিন্দারা যারা চলে গেছিলো, পরিস্থিতি শান্ত হওয়ায় তারা আবার আসছে। তবে চলে আসলেও আতঙ্ক এখনও পুরোপুরি কাটেনি।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়টি এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র ছিল। সীমান্তের ওপারের অস্থিরতায় এটি স্থানান্তর করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেয়া হয়েছে। এখন স্কুলটিতে তালা ঝুলছে।
মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতার জেরে সম্প্রতি ঘুমধুমের ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। পাঠদান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না। এ বিদ্যালয়গুলো কবে খোলা হবে, সে বিষয়ে এখনও প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেয়নি।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, 'আমরা আগামী সপ্তাহে এটা নিয়ে বসবো। উপর মহলে জানাতে হবে, তারাই সিদ্ধান্ত দিবেন।'
এদিকে গতকাল টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ সংলগ্ন নাফ নদীর ওপারে রাতভর থেমে গোলাগুলি হয়েছে। ভারী বিস্ফোরণের শব্দ এসেছে। তবে মাঝখানে নাফ নদী থাকায় ও দূরত্ব বেশি হওয়ায় সেই শব্দ বাসিন্দাদের মাঝে খুব একটা আতঙ্ক ছড়ায়নি।
সম্প্রতি মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ লড়াইয়ের কারণে সীমান্তে স্থলপথের পাশাপাশি নৌপথে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সমন্বিতভাবে কাজ করার কথা জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আদনান চৌধুরী বলেন, 'আমরা মাছধরার নৌকা এবং সার্ভিস বোটগুলো বন্ধ করিনি। কারণ সেন্টমার্টিন বাংলাদেশের একটা অংশ। স্থানীয় মানুষজন যাতে আসা যাওয়া করতে পারে এজন্য।'
মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতার মূল্য যেন আর বাংলাদেশকে দিতে না হয় সেই আশা সীমান্ত বাসিন্দাদের।