ভ্রমণ
দেশে এখন
0

সড়কপথে সুন্দরবনের দেখা মেলে সাতক্ষীরা রেঞ্জে

সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরা রেঞ্জ হয়ে সুন্দরবন ভ্রমণে মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। তবে পর্যটন নীতিমালা ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে সম্ভাবনাময় এ খাতের প্রসার ঘটছে না। নিরাপত্তা, অনুমতি, খরচ আর জটিল প্রক্রিয়ার কারণে ইচ্ছা থাকলেও সুন্দরবন ভ্রমণে আগ্রহ হারাচ্ছেন পর্যটকরা।

সড়ক পথে দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে সাতক্ষীরার মুন্সিগঞ্জ আসলেই দেখা মেলে অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি বিশ্ব ঐতিহ্য ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন। তাইতো এই জেলার ব্রান্ডিং হয়েছে "সাতক্ষীরার আকর্ষণ, সড়ক পথে সুন্দরবন"।

প্রতিবছর পর্যটন মৌসুমে হাজারও পর্যটক সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করতে সাতক্ষীরা রেঞ্জের কলাগাছিয়া, দোবেকি পর্যটন কেন্দ্রে ঘুরতে আসেন। এখানকার নদী-খালে চলাচলের সময় দেখা মেলে চিত্রা হরিণ, বানর, কুমিরসহ নানা প্রানী। এমনকি রয়েল বেঙ্গল টাইগারও দেখা যেতে পারে। এছাড়া সুন্দরবনের শেষ প্রান্তে মান্দারবাড়িয়া সমুদ্র সৈকতসহ আকর্ষণীয় সব স্পট রয়েছে এই রেঞ্জে।

সুন্দরবনের পাশেই থাকার জন্য রয়েছে রিসোর্টসহ কয়েকটি ইকো ট্যুরিজম সেন্টার। তবে দ্রুতগতি জলযান ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধার আবাসিক হোটেল-মোটেল না থাকায় এ পথে সুন্দরবনে আসতে তেমন আগ্রহী নন অনেক পর্যটক। এছাড়া বনে প্রবেশে প্রায়ই বিধিনিষেধ থাকায় এই রেঞ্জে পর্যটকের সংখ্যা তেমন বাড়ছে না।

পর্যটকরা বলেন, 'মহিলা মানুষদের ওঠা-নামা করতে কষ্ট হয়। পা পিছলে পড়ে যাবার সম্ভাবনা আছে। বোটের ভাড়া অনেক বেশি, ৩ হাজারের উপরে। টয়লেটের ব্যবস্থা নাই।'

সুন্দরবনের কুমির

পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পদ্মা সেতুর সুবিধা নিয়ে সুন্দরবনের সাতক্ষীরা অংশে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু সরকারি উদ্যোগ না থাকায় সেটি বিকশিত হচ্ছে না। তাছাড়া সরকারিভাবে সাতক্ষীরার সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকাকে এখনো পর্যটন এলাকা ঘোষণা করা হয়নি। এজন্য বড় বিনিয়োগে কেউ আগ্রহী হয়নি।

স্থানীয়রা বলেন, 'গত বছরের তুলনায় পর্যটকের সংখ্যা অনেক কম। তারা সব ভালো মানের জিনিস চায়। সরকারি রাজস্ব, নৌকার খরচ এবং বাড়তি গাইড খরচ পর্যটকদের কাছে বিরাট বোঝা হইয়া গেছে।'

ট্যুর অপারেটর সমিতির সভাপতি আনিসুর রহমান বলেন, 'অনেকেই এই জায়গাটার কথা জানে না এবং রাস্তাঘাটের বেহাল দশার কারণে এখানে পর্যটকের সংখ্যা কম।'

স্বদেশের পরিচালক মাধব দত্ত বলেন, 'পর্যটকদের মনোরঞ্জনের জন্য আবাসস্থল গড়ে তোলা উচিত। তাহলে সুন্দরবনের পর্যটন ব্যবস্থা অনেক উন্নত হবে।'

পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে এরইমধ্যে বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকটি পর্যটন স্পট নির্মাণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানান সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক ইকবাল হুছাইন চৌধুরী। বলেন, 'আসলে সুন্দরবন সংরক্ষিত এলাকা। এখানে পর্যটনের ক্ষেত্রে কিছুটা বিধি-নিষেধ মানতে হয়। চাইলাম আর ঢুকে গেলাম এই ধরনের ব্যাপার কিন্তু নেই। সেক্ষেত্রে সরকারিভাবে পর্যটন কেন্দ্র ঘোষণার বিষয়টা কিছু আলাপ আলোচনার মধ্যে রয়েছে।'

বন বিভাগের তথ্যমতে, সুন্দরবন ভ্রমণের উপযুক্ত সময় অক্টোবর থেকে এপ্রিল। প্রতিবছর এ সময় দেশি-বিদেশি পর্যটকরা সুন্দরবন ভ্রমণে আসেন। চলতি অর্থবছরে সাতক্ষীরা রেঞ্জে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।

এভিএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর