রাঙামাটির পাহাড়ি আঁকাবাঁকা উঁচুনিচু সড়ক, দীগন্ত বিস্তৃত সবুজ অরণ্য আর দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ কাপ্তাই লেক পর্যটকদের কাছে সারা বছরই আকর্ষণীয়। বিশেষ করে রাঙামাটি শহরে পর্যটন ঝুলন্ত সেতু, কাপ্তাই হ্রদে নীল জলরাশিতে নৌভ্রমণ, পলওয়েল পার্ক, আরণ্যক, সুবলং, আসামবস্তি কাপ্তাই সড়ক, সাজেক ও কাপ্তাইয়ে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা।
আজ (বুধবার, ২ এপ্রিল) রাঙামাটি ঝুলন্ত সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে পর্যটকদের বিপুল উপস্থিতি। অনেকেই দল বেধে ট্যুরিস্ট বোট ভাড়া করে নৌভ্রমণ করছেন। ঝুলন্ত সেতুতে নিজেদের আনন্দের মুহূর্তকে অনেকেই সেলফি বন্দি করে রাখছেন। কেউ বা ছায়ায় বসে খোশগল্পে মেতে উঠেছেন পরিবার পরিজনের সাথে।
চাঁদপুর থেকে চল্লিশ জন বন্ধুর সাথে ভ্রমণে আসা তরুণ পর্যটক মো. নাঈম হোসেন বলেন, 'এখানে সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে সুবলং ঝর্ণা। দুঃখের বিষয় ঝর্ণাতে পানি নাই। বিষয়টি খুব খারাপ লাগছে। এখন ঝুলন্ত ব্রিজে আছি। এখানে বেশ ভিড় দেখছি। খুব ভালো লেগেছে। নেক্সট আবার ফ্যামিলি নিয়ে ঘুরতে আসবো।'
চট্টগ্রাম থেকে পরিবার নিয়ে আসা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ফারদু বলেন, 'পাহাড় আর লেক দুটো পাশাপাশি। পানি আর পাহাড়ের উচ্চতার যে একটা গভীর সম্পর্ক সেটা রাঙামাটিতে আসলে সবচেয়ে বেশি বোঝা যায়। কাপ্তাই-রাঙামাটির জায়গাগুলো এজন্যই সবচেয়ে বেশি পছন্দের।'
রাঙামাটি শহরে ৫৬টি আবাসিক হোটেল, ১৭টি রিসোর্ট ও সাজেকে ৯১ টি হোটেল রিসোর্ট এবং কাপ্তাইয়ে বেশ কয়েকটি হোটেল রিসোর্ট রয়েছে। তবে সবমিলিয়ে ১৫ হাজার পর্যটকের রাত্রি যাপনের ব্যবস্হা রয়েছে এই তিন পর্যটনকেন্দ্রে। এই ঈদের টানা ছুটিতে সবমিলিয়ে অন্তত ২০ কোটি টাকার বাণিজ্য হবে বলে আশা খাত সংশ্লিষ্টদের।
রাঙামাটি আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি মোস্তফা কামাল উদ্দিন বলেন, 'আমরা এই ঈদে পর্যটকদের ভালো সাড়া পাচ্ছি। এরইমধ্যে ৮০ থেকে শতভাগ পর্যন্ত আগাম বুকিং হয়েছে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত। আশা করছি এবার ভালো ব্যবসা হবে।'
বছরে কয়েক লাখ দেশি-বিদেশি পর্যটক ভ্রমণে আসেন। সাধারণত ছুটির দিনগুলোতে গড়ে ১৫ থেকে ২০ হাজার পর্যটকের উপস্থিতি থাকে রাঙামাটির তিন পর্যটনকেন্দ্রে। আবার বিশেষ দিনগুলোতে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৬০ থেকে ৭০ হাজারে।