কৃষি , অর্থনীতি
দেশে এখন
0

আশুগঞ্জ মোকামে উঠতে শুরু করেছে আমন ধান

অভিজিৎ শান্ত
ব্রাহ্মণবাড়িয়া

বেচাকেনা জমে উঠেনি পূর্বাঞ্চলের সবচেয়ে বড় মোকাম আশুগঞ্জে

সুনামগঞ্জের দিরাই থেকে প্রায় ৬শ' মণ নতুন ধান নিয়ে আশুগঞ্জ মোকামে এসেছেন আবু হানিফ। তবে যে দরে কিনেছেন কৃষকের ধান- মোকামে তার চেয়ে প্রায় ১শ' টাকা কমে কেনাবেচা হচ্ছে। আর এতেই লোকসানের শঙ্কা তার।

আবু হানিফ এখন টেলিভিশনকে বলেন, 'আমাদের অবস্থা খুবই খারাপ। প্রতি ট্রিপেই ৪০-৫০ হাজার টাকা লোকসান হচ্ছে। প্রতি মণে একশো টাকা খরচ হয়। যার পুরোটাই লস।'

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের মেঘনা নদীর তীরের এই হাট শতবছরেরও বেশি পুরনো। কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোণা, ময়মনসিংহসহ হাওরাঞ্চলে উৎপাদিত ধান কৃষকের কাছ থেকে এনে এখানে বিক্রি করেন ব্যবসায়ীরা।

জেলার প্রায় আড়াইশ চালকলে ধানের যোগান দেওয়া এই হাট পূর্বাঞ্চলের সবচেয়ে বড় মোকাম হিসেবে পরিচিত। সরবরাহ ঘাটতির কারণে সংকট তৈরি হয় ধানের- যা প্রায় চার মাস স্থায়ী হয়। তবে গত ১০দিন ধরে মোকামে আমন ধান উঠছে। ফলে কাটতে শুরু করেছে ধানের সংকট। তবে ধানের কেনাবেচা কম হওয়ায় লোকসানের শঙ্কা ব্যবসায়ীদের।

ধান ব্যবসায়ীরা জানান, ধানের বাজারের সাথে চালের বাজারের কোন মিল নেই। আমরা চাই ধান-চাল সঠিক দামেই বিক্রি হোক।

বর্তমানে মোকামে পুরনো বিআর-২৯ জাতের ধান প্রতি মণ কেনাবেচা হচ্ছে ১২শ' ৩৫ টাকা এবং হীরা ধান বিক্রি হচ্ছে ১১শ' ৭০ টাকায়। এছাড়া নতুন বিআর-৩৯ জাতের ধান মানভেদে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা এবং বিআর-৪৯ ধান প্রতিমণ কেনাবেচা হচ্ছে ১ হাজার ৫০ টাকায়।

তবে চালকল মালিকরা বলছেন, ধানের তুলনায় চালের দাম কম হওয়ার পাশাপাশি খোলা বাজারে সরকারিভাবে চাল বিক্রি এবং নির্বাচন ঘিরে বাজারে চালের চাহিদা কমেছে। অনেক মিলে পর্যাপ্ত চাল মজুত থাকায় নতুন করে মোকাম থেকে ধান কেনা হচ্ছে কম।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা অটোরাইস মিল মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ বলেন, 'বাজারে বিক্রির পরিমাণ এখন চার ভাগের এক ভাগে। পাইকাররাও আমাদের কাছে চাল চায় না তাই আমরাও দিতে পারি না।'

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন চাল কল থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ কোটি টাকার চাল বাজারজাত করা হয়। তবে এখন চাহিদা কমায় চাল কেনাবেচা হচ্ছে মাত্র ২ থেকে ৩ কোটি টাকার।

বর্তমানে ৫০ কেজির প্রতি বস্তা পুরানো বিআর-২৮ ও বিআর-২৯ জাতের চাল ২৫শ' টাকা এবং নতুন বিআর-৩৯ ও ৪৯ চাল কেনাবেচা হচ্ছে ২২শ' ৫০ টাকা দরে।

এভিএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর