প্রকৃতির পালাবদলে এখন প্রভাতে শিশির ভেজা ঘাস আর সামান্য কুয়াশার আবরণ জানান দিচ্ছে শীতের আগমন। তাই শীত মৌসুমে শুরু হতে না হতেই গাছ তোলা, হাঁড়ি প্রস্তুত, রস জ্বালানোর চুলা তৈরিতে ব্যস্তসময় পার করছেন যশোরের গাছিরা।
আর কয়েকদিন পরেই রস সংগ্রহ করে মেঠো পথ ধরে নিরন্তর ছুটে চলবেন এখানকার গাছিরা। সংগ্রহ করা সুমিষ্ট খেজুর রস থেকে তৈরি হবে পাটালি গুড়। যা স্থানীয় চাহিদার পাশাপাশি যাবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। তবে সারাবছর কাজ না থাকায় ও চাহিদা অনুযায়ী দাম না পাওয়ায় দিন দিন কমছে গাছির সংখ্যা।
কয়েকজন গাছি বলেন, আগে গাছে বেশি রস হতো। কিন্তু এখন গাছে আগের মতো রস হয় না। কষ্ট করে ফল পাওয়া যাচ্ছে না, সেজন্য গাছি কমে গিয়েছে। অনেকে ভয়ে বড় গাছে উঠতে চায় না।
চলতি মৌসুমে রস বিক্রি হবে ১ কোটি টাকার। গুড় পাটালির নির্ভেজাল স্বাদ ও ঐতিহ্য ধরে রাখতে নতুন করে খেজুর গাছ রোপণের পাশাপাশি গাছিদের প্রশিক্ষণ, উপকরণসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেয়া কথা বলছে-কৃষি বিভাগ।
যশোর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর অতিরিক্ত উপ-পরিচালক ড. সুশান্ত কুমার তরফদার জানান, 'প্রতি গাছ থেকে গড়ে ১৪ কেজি গুড় উৎপাদন হয়। আমাদের হিসেবে যশোরে ৩৭ লাখ ৫০ হাজার গুড় হয়। এ থেকে প্রায় ৯৫ কোটি টাকা আসে।'
এই জেলায় খেজুর গাছের পরিমাণ ১৭ লাখ ২১ হাজার। আর গাছি রয়েছে সাড়ে ৭ হাজার। এরমধ্যে গুড় উৎপাদনের সাথে জড়িত ১৭ হাজার কৃষক।