চার ঘণ্টা ধরে জ্বলছে কড়াইল বস্তি; চারপাশে কেবল আহাজারি

নিয়ন্ত্রণে ফায়ারের ২০ ইউনিট

সম্প্রতি কড়াইল বস্তিতে আগুন
সম্প্রতি কড়াইল বস্তিতে আগুন | ছবি: সংগৃহীত
1

রাজধানীর মহাখালীর কড়াইল বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। চার ঘণ্টা ধরে চলা এ আগুন বড় আকার ধারণ করে চারপাশে ছড়িয়ে পড়েছে। মাথাগোঁজার ঠাঁই হারিয়ে নিঃস্ব প্রায় বস্তিবাসী, আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে চারপাশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিট। সব কিছু ঠিক থাকলে এক থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

তবে পানির অভাবে যেমন ফায়ার কর্মীরা হিমশিম খাচ্ছেন, তেমনি যানজট ঠেলে আক্রান্তস্থলে পৌঁছাতে বেগ পোহাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস।

আজ (মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত। আগুন নিয়ন্ত্রণে শুরুতে যোগ দেয় ৭টি ইউনিট। এরপর আগুনের তীব্রতা বাড়তে থাকলে একে একে বেড়ে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট দাঁড়ায় ২০টিতে।

প্রাথমিক তথ্যে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়েছে কি না, সেটি এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। আগুন সূত্রপাত সম্পর্কেও তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানাতে পারেনি সংস্থাটি।

আরও পড়ুন:

আগুন তিন দিক থেকে সীমিত করা গেছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। বাকি থাকা একটি দিক নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ চলছে। সংস্থাটি বলছে, সব ঠিক থাকলে আগামী এক থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

রাত সাড়ে ৯টার পর সর্বশেষ পরিস্থিতি জানাতে ব্রিফিংয়ে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘প্রথমে ১৬টি ইউনিট ঘটনাস্থলে কাজ করছিল। পরে পরিস্থিতি বিবেচনায় ইউনিট বাড়িয়ে প্রায় ২০টি করা হয়েছে। আগুনের শিখার তীব্রতা কমেছে এবং বেশ কয়েকটি অংশে আগুন সীমিত করা সম্ভব হয়েছে।’

জানা গেছে, আগুনের আক্রান্তস্থল কড়াইল বস্তির মাঝামাঝি হওয়ায় এটি নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের প্রত্যেকটি টিমকে যানজট ঠেলে পৌঁছাতে বেশ সময় লেগে গেছে। এতে আগুন দ্রুত আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে।

বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দাউ দাউ করে আগুন খুব দ্রুত টিনের ঘরগুলোয় ছড়িয়ে পড়ে। আতঙ্কিত হয়ে লোকজন যতটুকু সম্ভব নিজের আশ্রয়স্থল থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে সরে এসেছেন।

এদিকে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় সরু সড়ক ও আশপাশে মানুষের ব্যাপক ভিড় সৃষ্টি হয়েছে। এতে ঠিকঠাক কাজ করতে পারছে না ফায়ার সার্ভিস। ঘটনাস্থলের আশপাশে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, তারপরও মানুষের ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।

বস্তিবাসীর আহাজারিতে চারপাশ ভারী হয়ে উঠেছে। স্বল্প আয়ের মানুষগুলোর শেষ সম্বল থাকার জায়গাটুকু পুড়ে শেষ হওয়ায় তারা কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। তবে এখন পর্যন্ত হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

সেজু