বিএনপি চেয়েছিল ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং গণভোট একইদিনে হোক। জামায়াতের দাবি ছিল, জাতীয় নির্বাচনের আগেই গণভোট করতে হবে। জুলাই সনদে যেই ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাবকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, এবার সেই সংস্কার বাস্তবায়নে মত দিবেন দেশের সাড়ে ১২ কোটি ভোটার। সংসদ নির্বাচনের দিন বা তার আগেই গণভোট করতে প্রধান উপদেষ্টার কাছে সুপারিশ করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রিয়াজের নেতৃত্বে দুপুর ১২টার দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রবেশ করেন ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা। উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের উপস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে সুপারিশ তুলে দেন তারা। এসময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জুলাই সনদ সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারলে অতীত থেকে মুক্ত হতে পারবে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন:
যমুনা থেকে বেরিয়ে হেয়ার রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আসেন ঐকমত্য সদস্যরা। সাংবাদিকদের সামনে বিস্তারিত তুলে ধরেন ড. আলী রিয়াজ। নির্বাচন কমিশনের সাথে আলোচনা করে গণভোটের দিনক্ষণ ঠিক করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
ড. আলী রিয়াজ বলেন, ‘জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচনের আগে গণভোট অনুষ্ঠান করেন— আমরা এটা লিখিতভাবে বলেছি। এর বাইরে আমরা সরকারকে আজকে যেটা বলেছি সেটা হচ্ছে, তারা যেন অবিলম্বে এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে নির্বাচনের একটি তফসিল তৈরি করে ফেলে।’
তিনি জানান, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ ২০২৫ অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে গণভোট। যেখানে থাকবে হ্যাঁ বা না প্রশ্ন। রাষ্ট্রপতি নয়, সরকারকেই গণভোটের জন্য সংবিধান সংস্কার আদেশ জারি করার সুপারিশ দেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা।
আরও পড়ুন:
ড. আলী রিয়াজ বলেন, ‘আমাদের প্রস্তাবের বিস্তারিত দেয়ার পর অনুরোধ করেছি, যত দ্রুততার সঙ্গে সম্ভব, যেন তারা এ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার সূচনা করে। আমরা আমা করি তারা সেটা করবেন।’
জানা গেছে, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী রাষ্ট্র সংস্কারের প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে ‘জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন সংবিধান সংস্কার আদেশ ২০২৫’ জারির প্রস্তাব দিয়েছে ঐকমত্য কমিশন। এ আদেশ বাস্তবায়নে পরবর্তী সংসদ আইনসভার পাশাপাশি সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে কাজ করবে প্রথম নয় মাস। এ আদেশ বাস্তবায়নে সার্বভৌম ক্ষমতা আসবে গণভোটের মাধ্যমে। এর আগে গতকাল (সোমবার, ২৭ অক্টোবর) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে ঐকমত্য কমিশনের সমাপনী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, গত ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয় জুলাই জাতীয় সনদের স্বাক্ষর অনুষ্ঠান। প্রথম ধাপে বিএনপি-জামায়াতসহ ২৪টি রাজনৈতিক দল ও জোট এতে স্বাক্ষর করে।





