আজ (শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেয়া এক পোস্টে প্রেস সচিব জানান, টিআইবির দাবিটি ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এবং যাচাই বাছাই ছাড়াই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্ট থেকে নেয়া হয়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, ‘বর্তমান প্রতিনিধি দল অতীতের শেখ হাসিনা সরকারের আমলের তুলনায় উল্লেখযোগ্য ভাবে ছোট এবং এটি অনেক বেশি মনোযোগী, কর্মঠ ও ফলাফলমুখী।’
শফিকুল আলম টিআইবিকে একটি মর্যাদাপূর্ণ নাগরিক সমাজ সংগঠন হিসেবে উল্লেখ করেন, যা দীর্ঘদিন ধরে স্বচ্ছতার পক্ষে কাজ করছে। তবে তিনি যাচাই করা তথ্যের পরিবর্তে গুজব ও ভুয়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের তথ্যের ওপর নির্ভর করে জনসম্মুখে বিবৃতি দেওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন।
প্রেস সচিবের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, এবারের প্রতিনিধি দলে সদস্য সংখ্যা ৬২ জন—যা টিআইবির দাবি করা ১০০-এর বেশি নয়। তিনি আরও স্পষ্ট করেন যে, গত বছর প্রতিনিধি দলে ৫৭ জন সদস্য ছিলেন, তবে তাতে প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণে ভ্রমণ করা ছয়জন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না।
শফিকুল আলম জানান, এবারের সফরসঙ্গীদের মধ্যে প্রায় এক-তৃতীয়াংশই নিরাপত্তা কর্মকর্তা, যাদের প্রধান উপদেষ্টা ও অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগের সমর্থকদের পক্ষ থেকে আসা প্রকাশ্য হুমকির কারণে এ বর্ধিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা অপরিহার্য এবং অনেক কর্মকর্তা প্রতিদিন ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করছেন।
আরও পড়ুন:
তিনি আরও জানান যে, প্রতিনিধি দলটি গত পাঁচ দিনে কমপক্ষে এক ডজন উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছে, যার মধ্যে ছয়টির বেশি রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা অন্তর্ভুক্ত। প্রেস সচিবের ভাষ্যমতে, এ প্রতিনিধি দলের মূল উদ্দেশ্য হলো জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের মতো বৈশ্বিক কূটনৈতিক মঞ্চে বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থ তুলে ধরা।
শফিকুল আলম উল্লেখ করেন যে, বর্তমান সময়ে যখন বিভিন্ন মহল দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে, তখন এ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন বাংলাদেশের জন্য বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
প্রেস সচিব অভিযোগ করেন যে, আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগীরা কোটি কোটি টাকা খরচ করে অন্তর্বর্তী সরকার ও জুলাই গণঅভ্যুত্থান সম্পর্কে ভুয়া তথ্য ছড়াচ্ছে এবং বিদেশে লবিং করছে, যেখানে কিছু আন্তর্জাতিক মহলের নীরব সমর্থনও রয়েছে।
তিনি আরও জানান, সফরসঙ্গী তালিকায় এমন ব্যক্তিরাও আছেন যারা আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের রোহিঙ্গা সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন, যা প্রমাণ করে যে জরুরি মানবিক ও নিরাপত্তা ইস্যুতে ঢাকা তার নেতৃত্ব অব্যাহত রেখেছে।
এছাড়াও, কয়েকজন উপদেষ্টা আনুষ্ঠানিক প্রতিনিধি দলের বাইরে থেকেও বৈশ্বিক সমকক্ষদের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন। দেশের জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদেরও এ সফরে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, এবং তাদের সহায়তার জন্য কিছু কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছেন। প্রেস সচিবের মতে, এ অন্তর্ভুক্তিমূলক পদক্ষেপ স্পষ্ট বার্তা দেয় যে, বাংলাদেশ শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক উত্তরণের প্রতি দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।





