কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তের নাফ নদী ও সমুদ্রে ভাসমান নৌকাগুলোকে রাডারের সহায়তায় নজরদারি করছে বিজিবি। এ প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রায় ৯৬ নটিক্যাল মাইল এলাকাজুড়ে সম্ভব হচ্ছে রক্ষণাবেক্ষণ।
মিয়ানমারের দিক থেকে শূন্যরেখা অতিক্রম করে কোনো নৌকা বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করলেই রাডার পর্যবেক্ষক বার্তা পাঠান টহল দলের কাছে। সেই বার্তা পেয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যেই দ্রুতগামী জলযানে সেখানে পৌঁছে যায় বিজিবির টহল দল।
এছাড়া ড্রোন ব্যবহার করে আকাশপথে এবং রাতে নাইট ভিশন থার্মাল ক্যামেরায় পুরো নাফ নদীজুড়ে পর্যবেক্ষণ চালায় বিজিবি। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যেও কাজ করে এসব প্রযুক্তি। এতে ধরা পড়ছে সীমান্ত পেরিয়ে আসা মাদকের চালান ও মানবপাচারকারীরা, কমে এসেছে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশও।
থার্মাল ক্যামেরা পরিচালনাকারী নায়েক মো. মাহবুব আলম বলেন, ‘আমরা এটা দিয়ে পরিষ্কার দেখতে পাই, মিয়ানমার থেকে কোনো নৌকা বর্ডার ক্রস করে বাংলাদেশে আসলে অথবা কোনো লোক সাঁতরে বাংলাদেশে আসলে সেটাও আমরা এর মাধ্যমে শনাক্ত করতে পারি এবং সেই স্মাগলার ও মাদকদ্রব্য আটক করতে পারি।’
বিজিবি কর্মকর্তারা বলছেন, প্রযুক্তির সহায়তায় সমুদ্রপথে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের জলসীমা রক্ষণাবেক্ষণের সময় অনেক নৌকার সন্দেহজনক চলাচল নজরে আসছে, যার ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট বিজিবির হাতে রয়েছে। এসব তথ্য কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীকেও সরবরাহ করছে তারা।
বিজিবি সূত্র বলছে, চট্টগ্রাম ও কুতুবদিয়ার কিছু ট্রলার ভাটার সময় রওনা হয়ে জোয়ারের সময় মিয়ানমারে প্রবেশ করে। সেখানে পণ্য পৌঁছে দিয়ে বিনিময় হচ্ছে টাকা বা মাদকের চালান।
টেকনাফের বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন-২ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, ‘প্রযুক্তির নজরদারি সেইন্টমার্টিন ছাড়িয়ে আমাদের জলসীমা পর্যন্ত যতটুকু জায়গা আছে ততটুকু বিস্তৃত করেছি এবং এর ফলে আমরা যথেষ্ট তথ্য ও উপাত্ত পাচ্ছি, যা আমরা আন্তঃবাহিনী সমন্বয়ের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট বাহিনীগুলোকে নিয়মিত তথ্য দিয়ে যাচ্ছি।’
টেকনাফ সীমান্তে বিজিবির নজরদারি কেবল মাদক ও চোরাচালান রোধেই নয়, দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার এক নিরবিচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া।




