জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে লিখিত মতামতে যেসব প্রস্তাব-পরামর্শ এবি পার্টির

0

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত ১৬৬টি প্রস্তাবের মধ্যে ১০৮টি বিষয়ে একমত, ৩২টি বিষয়ে দ্বিমত এবং ২৬টি বিষয়ে আংশিক একমত পোষণ করে লিখিত মতামত দিয়েছে এবি পার্টি। আজ (সোমবার, ১৭ মার্চ) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে পার্টির পক্ষ থেকে চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, ভাইস চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) দিদারুল আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক ও ব্যারিস্টার নাসরিন সুলতানা মিলির সমন্বয়ে একটি দল মতামত জমা দিয়েছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষে মতামত গ্রহণ করেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. আলী রিয়াজ, নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. বদিউল আলম মজুমদার ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

উল্লেখ্য, গত ৬ মার্চ জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কর্তৃক সংবিধান সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো স্প্রেডশিট আকারে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)'র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রেরণ করা হয়।

তারই প্রেক্ষিতে আজ ১৭ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যালয়ে কমিশনের নির্দেশনা মোতাবেক পূরণকৃত স্প্রেডশিটসমূহ জমা দেয় এবি পার্টি। স্প্রেডশিটসমূহে সংস্কারের সময়কাল ও বাস্তবায়নের উপায় হিসেবে সর্বমোট ৬টি প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে।

এবি পার্টি যেসব বিষয়ে প্রস্তাব দিয়েছে তার মধ্যে রয়েছে সরাসরি ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রস্তাব; দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্টে আপত্তি; প্রাদেশিক শাসন ব‍্যবস্থায় দ্বিমত; সংবিধানের সংশোধনী উভয় কক্ষের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার অনুমোদন এবং গণভোটের বিধানকে সমর্থন এবং প্রার্থীর বয়সসীমা ২১ এর পক্ষে মত।

প্রথম প্রস্তাবনায় ‘নির্বাচনের আগে অধ্যাদেশের মাধ্যমে’ উল্লেখ করেছে এবি পার্টি। তারা বলছে, উক্ত উপায়ে সংবিধান সংশোধন বর্তমান সংবিধানের আলোকে অগ্রহণযোগ্য। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৩ (১)(খ) এর বিধান মোতাবেক রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ প্রণয়ন ক্ষমতার মাধ্যমে সংবিধানের কোনো বিধান পরিবর্তন বা রহিত করা যায় না। তাই বর্তমান সংবিধান স্থগিত বা বাতিল না করে অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন করা বর্তমান সংবিধান সাপেক্ষে বেআইনি।

তবে বর্তমান সংবিধান স্থগিত করে জুলাই রেভোলিউশনের স্পিরিটের আলোকে প্রস্তাবিত সাংবিধানিক বিধানসমূহ পরিবর্তন/পরিবর্ধন/পরিমার্জন করে নতুন সংবিধান পুনর্লিখন করা যেতে পারে। এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে আপিল বিভাগের কাছে সরকার অধিকতর সাংবিধানিক ব্যাখ্যা চাইতে পারেন।

অন্যদিকে অবশিষ্ট ৫টি প্রস্তাবনা সার্বিক বিবেচনায় দুরূহ ও সময়সাপেক্ষ বলে মনে করে এবি পার্টি। এমন পরিস্থিতিতে এবি পার্টি স্প্রেডশিটসমূহে উল্লিখিত সংস্কারের সময়কাল ও বাস্তবায়নের উপায় হিসেবে আইনি সম্ভাব্য জটিলতা থাকা সত্ত্বেও ১ম প্রস্তাবনাকেই (নির্বাচনের আগে অধ্যাদেশের মাধ্যমে) বেছে নিয়েছে।

তাছাড়া যেসব প্রস্তাবনায় সংবিধান সংশোধনের সম্ভাব্য উপাদান নেই সেসব ক্ষেত্রে প্রথম প্রস্তাবনাটিই (নির্বাচনের আগে অধ্যাদেশের মাধ্যমে) সবচেয়ে সহজসাধ্য বলে এবি পার্টির বিশ্বাস।

এসময় এবি পার্টির পক্ষে আরো উপস্থিত ছিলেন পার্টির সহকারী প্রচার সম্পাদক রিপন মাহমুদ, সহকারী দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট শরণ চৌধুরী ও সহকারী অর্থ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক।

এএইচ