বিনামূল্যে সাইবার সেবা ও প্রশিক্ষণ দিচ্ছে নোয়াখালীর একঝাঁক তরুণ

0

তথ্য প্রযুক্তির সহজলভ্যতায় ইন্টারনেট ও স্মার্ট ফোনের ব্যবহার যত বাড়ছে ততই বাড়ছে সাইবার অপরাধ। যা শহর পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে মফস্বল কিংবা গ্রামেও। সবচেয়ে বেশি সাইবার অপরাধের শিকার হচ্ছেন নারী শিক্ষার্থীরা। সাইবার অপরাধের শিকার মানুষদের নিরাপত্তায় কাজ করছেন নোয়াখালীর একঝাঁক তরুণ। দিচ্ছেন বিনামূল্যে সাইবার সেবা ও প্রশিক্ষণ।

নোয়াখালী সরকারী কলেজের ইংরেজী বিভাগের স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্রী মিতা (ছদ্ম নাম)। নভেম্বরের শুরুর দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শিকার হন হেনস্তার। এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে মিতার (ছদ্ম নাম) ছবি দিয়ে ফেসবুকে ফেক অ্যাকাউন্ট তৈরি করেন অপরিচিত কেউ। সেই ছবিতে মুখের অবয়ব তার থাকলেও বাকি অংশজুড়ে বসানো হয় অন্য কারো ছবি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি দেখে থানা-পুলিশের কাছে ছোটাছুটি করেও কোনো কূল কিনারা না পেয়ে নোয়াখালী সাইবার ওয়ারিয়র্সের দ্বারস্থ হয় তার পরিবার। তাদের সহযোগিতায় ফেসবুক থেকে ফেক অ্যাকাউন্টটি এবং ছড়িয়ে পড়া সকল ছবি মুছে ফেলা যায়।

নোয়াখালী সাইবার ওয়ারিয়র্স থেকে এখন পর্যন্ত এক হাজারের বেশি ভুক্তভোগী বিনামূল্যে সেবা পেয়েছেন। সাইবার সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান করেছে এই প্রতিষ্ঠানটি। বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তাদের অনলাইনে ই-কমার্স ব্যবসা সংক্রান্ত নানাবিধ জটিলতা নিরসনে কাজ করছেন তারা।

এছাড়াও হারিয়ে যাওয়া মোবাইল উদ্ধারে পুলিশকে সহযোগিতা, অনলাইন প্রতারণার শিকার উদ্যোক্তাদের টাকা উদ্ধার, হ্যাক হয়ে যাওয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট পুনরুদ্ধার, সাইবার সচেতনতায় সেমিনার ও ওয়েবেনিয়র, বিনামূল্যে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ দিচ্ছে স্বেচ্ছাসেবীরা।

সংগঠনটির উদ্যোক্তারা বলছেন বর্তমান সময়ে সাইবার অপরাধ কমিয়ে আনতে এবং তরুণদের সাইবার জগত সম্পর্কে সচেতন করতেই এমন কর্মযজ্ঞ।

এই কার্যক্রম ইতোমধ্যে জেলা জুড়ে ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছে। তাদের সহযোগিতায় জেলা পুলিশও অনেক সাইবার অপরাধের রহস্য উন্মোচন করেছেন।

নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইব্রাহীম বলেন, ‘তাদের যদি কোনো সাহায্যের দরকার হয় আমাদের থেকে নিয়ে থাকে, অন্যদিকে তাদের সাধ্য মতো তারা মানুষকে সহযোগিতা করে থাকে। আমরা প্রয়োজনে একে অপরের সহযোগিতা নিয়ে থাকি।’

এমন সংগঠনগুলোর সদস্যদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আরো দক্ষ করা সময়ের দাবি বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

এএম