ভয়াবহ আগুনের কবলে চট্টগ্রামে এস আলম গ্রুপের চিনি কারখানা

0

সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আগুন লাগে চট্টগ্রামে এস আলম গ্রুপের চিনি কারখানায়। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। সাথে যোগ দেয় বিমান ও নৌবাহিনী।

রমজানের আগে বাজারজাত করার জন্য পুড়ে যাওয়া গুদামে প্রায় ১ লাখ টন অপরিশোধিত চিনি রাখা ছিল বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। এদিকে কীভাবে আগুনের সূত্রপাত ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

ঘটনা তদন্তে ৭ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। এ কমিটিকে তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

বিকেল থেকে দেখা যায়, পুরো কারখানাটিতে দাউ দাউ জ্বলছে আগুন। কয়েকতলা সমান উঁচু ছাউনির ওপর আগুনের লেলিহান শিখা। পুড়ে এবড়ো-থেবড়ো হয়ে গেছে টিন, যা দেখে বোঝা যায় আগুনের ভয়াবহতা।

বিশাল কালো ধোঁয়ার কুন্ডলীতে ঢাকা চারপাশ। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হলে বাড়ে আগুনের ভয়াবহতা। আগুনের লাল আভা ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের পুরো আকাশে।

জানা গেছে, কারখানার একটি গুদামঘর থেকেই আগুনের সূত্রপাত। এরপর কনভেয়ার ভেল্ট হয়ে ছড়িয়ে পড়ে কারখানার একটি অংশে। খবর পেয়ে, আগুন নেভাতে ছুটে আসে ফায়ার সার্ভিস। সঙ্গে যোগ দেয় নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর বিশেষ ইউনিট।

চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক দিনমনি শর্মা বলেন, 'এই গোডাউনে যেসব দাহ্য বস্তু আছে তা আমাদের কেমিক্যাল দিয়ে নেভানো যাবে না। বরং কেমিক্যাল আরও জ্বলবে। সেজন্য আমরা পানি দিয়ে আগুন নির্বাপণ করবো। এটাই সবচেয়ে ভালো মাধ্যম। '

বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ফ্লাইট লে. আবিদ বলেন, 'আগুনের ভয়াবহতা ব্যাপক। আমরা চারদিক থেকে লক্ষ্য রাখছি এটা নিয়ন্ত্রণ বেশ সময়সাপেক্ষ। তারপরেও আমরা চেষ্টা করছি।'

চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় কমিশনার আনোয়ার পাশা বলেন, 'এরই মধ্যেই জেলা প্রশাসন থেকে একটি কমিটি করা হয়েছে। বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট চট্টগ্রামকে আহ্বায়ক করে। এখানে বিভিন্ন দপ্তরের উপযুক্ত ব্যক্তিরা আছেন। ঘটনা তদন্তে ৭ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। তাদেরকে আগামী তিনদিনের মধ্যে যথাযথ রিপোর্ট দিতে করতে বলা হয়েছে।'

আগুন নেভাতে যোগ দেয় কারাখানার কর্মী ও স্থানীয়রা। এসময় আহত হন একজন।

কারখানা কর্তৃপক্ষ জানায়, রমজানের আগে চারটি গুদামে পরিশোধিত ও অপরিশোধিত চিনিতে ভর্তি ছিলো। পুড়ে যাওয়া গুদামে রাখা ছিলো প্রায় ১ লাখ টন অপরিশোধিত চিনি। যা রমজানে বাজারজাতের জন্য আনা হয়েছিল।

এস আলম সুগারের এইচ আর এডমিন ম্যানেজার মো হোসেন বলেন, ‘মোট ৬টা গোডাউনের মধ্যে চারটি গোডাউনের ৪ লাখ টনের মত অপরিশোধিত ব্রাজিল থেকে আনা চিনি ছিল। জ্বলে শেষ হয়ে গেছে। স্থাপনা সব ধ্বংস হয়ে গেছে। আমরা চেষ্টা করছি যে আশপাশের আমাদের যে প্রসেস হাউস আছে, সেখানে যেন না ছড়িয়ে পড়ে আগুন।'

আগুন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের এলাকায়। আশেপাশে বেশ কিছু বসতি, দোকানপাট ও শিল্প-কারখানার অনেকেই মালামাল ও আসবাব গুটিয়ে সরে পড়ে।

এস আলমের এ কারখানা দেশে মোট চাহিদার ১০ শতাংশ পূরণ করে। ২০০৪ সালে স্থাপিত এ কারখানা থেকে প্রতিদিন বাজারজাত হয় ২ হাজার ৮শ' টন চিনি।

সেজু