এদিকে সরবরাহ কমায় সপ্তাহ ব্যবধানে মণপ্রতি ২ থেকে ৩ হাজার টাকা দাম বেড়েছে। নদীতে ইলিশ না থাকায় বিপাকে জেলার পাইকারি ব্যবসায়ীরা। তবে হতাশ না হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে মৎস্য বিভাগ।
জেলার মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীর জলসীমায় দলবেধে মাছ শিকারের দৃশ্য যেন দিন দিন হারাতে বসেছে। কারণ, শীত উপেক্ষা করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জাল ফেলেও দেখা মিলছে না রুপালি ইলিশের।
ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি ও সুষ্ঠু প্রজনন নিশ্চিতে ভোলার জলসীমায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা গত ২ নভেম্বর শেষ হয়। এরপর পর্যাপ্ত ইলিশের আশায় নদীতে নামেন জেলেরা। তবে নিষেধাজ্ঞার পর কয়েক দিন ইলিশের দেখা মিললেও এখন নদীতে শুধুই হাহাকার। দিন-রাত জাল ফেলেও ইলিশের দেখা না পাওয়ায় জেলার দুই লাখ জেলে হতাশ।
প্রতিদিন নৌকা-ট্রলার আর জাল নিয়ে নদীতে ছুটছেন জেলেরা। তবে ইলিশ না পেয়ে বেশিরভাগ ফিরছেন খালি হাতে। কেউ কেউ পাচ্ছেন পোয়া ও ছোট আকারের ইলিশ। যা পাওয়া যাচ্ছে তাতে ট্রলারের তেলের খরচও উঠছে না কারো। মোকামে চাহিদা অনুযায়ী ইলিশ সরবরাহ না করতে পারায় বিপাকে মৎস্য ব্যবসায়ীরা। আর প্রতি মণ ইলিশের দাম বেড়ে ৮৮ থেকে ৯০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
জেলেরা বলেন, ‘নদীতে ইলিশ মাছ নেই। আর নৌকা, ট্রলার নিয়ে বের হয়েও তেলের খরচ উঠছে না। পরিবার নিয়ে আমরা চলতে পারছি না।’
মৎস্য ব্যবসায়ীরা বলেন, বিভিন্ন মোকাম থেকে টাকা নিয়ে জেলেদের দিয়েছি। কিন্তু জেলেরা নদীতে ইলিশ পাচ্ছে না। আর আমরাও মাছ দিতে পারছি না।
এদিকে খুচরা হাট-বাজারে ইলিশের দাম বেশি হওয়ায় দূর-দূরান্ত থেকে নদীর তীরের মাছ ঘাটে ইলিশ কিনতে আসছেন অনেকে। কিন্তু ইলিশের আকাশচুম্বী দাম ও আকারে বড় ইলিশ না থাকায় শূন্য হাতেই ফিরছেন অনেকে। এছাড়া ইলিশের দাম নিয়ন্ত্রণে বাজার মনিটরিংয়ের দাবি জানান ক্রেতারা।

এদিকে ইলিশের দাম নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হবে বলে জানিয়েছে জেলার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময় মা ইলিশ যে ডিম ছেড়েছে তা বড় হতে ৩ থেকে ৪ মাস সময় লাগে। এখন ছোট আকারের ইলিশের দেখা মিললেও আগামী ফেব্রুয়ারি-মার্চ থেকে ভোলার নদীতে বড় আকারে ইলিশ পাওয়া যাবে।
চলতি বছর জেলায় ইলিশের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৯১ হাজার টন নির্ধারণ করা হয়েছে। আর দুই লাখের বেশি মানুষ মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এর মধ্যে অর্ধেকেরই বিকল্প আয়ের উৎস নেই।