দেশে আলুর বার্ষিক চাহিদা ৯০ লাখ টন। আর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে আলু উৎপাদন হয়েছে ১০৪ লাখ টন। চাহিদার চেয়ে বাড়তি উৎপাদন হলেও হু হু করে বাড়ছে নিত্য পণ্যটির দাম। অবস্থা এমন হয়েছে যে এক কেজি মোটা চাল কিনতে ভোক্তাকে খরচ করতে হয় ৫০ টাকা, সেখানে এক কেজি আলু কিনতে হচ্ছে ৫৫ টাকায়।
চট্টগ্রামে খুচরা বাজারে বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে আলু। ৫০-৬০ টাকায় ওঠানামা করছে দর।
এক ক্রেতা বলেন, ২৫-৩০ টাকা কেজি হইলেও কোন রকম চলত কিন্তু ৬০ টাকা দিয়ে আলু খাওয়া সম্ভব না।
চট্টগ্রামে রিয়াজুদ্দীন পাইকারি বাজারের চৈতন্যগলি। এখানে বুধবার আলু বিক্রি হয় ৪৩-৪৫ টাকা দরে। একমাসের ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে ৮-৯ টাকা।
উৎপাদনের পরও আলুর দাম বেশি হওয়ায় হতাশ ক্রেতারা
বিক্রেতারা বলেন, বেপারিরা বলতেছে তাদের মজুত কম। হিমাগারে তাদের আলু নেই। এখন তারা যদি পণ্য ছাড়েত তাহলে বাজার ঠিক হতে পারে।
ভারত থেকে আমদানির অনুমতি থাকলেও মান খারাপ ও সেখানে দাম বাড়ার কারণে আমদানির আলু নেই বাজারে।
দাম বাড়ার পর পাল্টাপাটি দোষারোপের প্রবণতা বহু পুরনো। এখানেও তার ব্যতিক্রম নয়। পাইকারদের দাবি মোতাবেক হিমাগারেই আলুর দাম পড়ছে বেশি। হিমাগারে আসলে কত করে আলু বিক্রি হচ্ছে এবং সেখানে সংরক্ষণ খরচই বা কেমন পড়ছে?
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসেবে, রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও নীলফামারীতে আলু চাষ হয়েছে এক লাখ ৬০২ হেক্টর জমিতে। যা গতবারের চেয়ে তিন হাজার ২৭৫ হেক্টর বেশি।
তবে কৃষকের নিজস্ব সংরক্ষণ ব্যবস্থা না থাকায় আলুর গন্তব্য মজুতদারের আড়ৎ কিংবা স্থানীয় হিমাগার। কিন্তু উৎপাদন বাড়লেও ৩৯টি হিমাগারে গড়ে ফাঁকা ত্রিশ শতাংশ যায়গা। কারণ জমি থেকেই অপরিপক্ক আলু কিনে নিয়েছেন জেলার বাইরের মজুতদাররা।
রংপুরে জমি থেকে অপরিপক্ক আলু বিক্রি করেছে কৃষক
রংপুর জেলা হিমাগার মালিক সমিতির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বাবলু বলেন, '৬০-৬৫ দিনেই জমি থেকে আলু বিক্রি করে দিয়েছে এবং তারা অনেক লাভবানও হয়েছে। তখন আলু হিমাগারের পরিমাণটা কমে গেছে।'
এদিকে বগুড়ায় সার-বীজ, কীটনাশকের দাম বাড়ায় এবার কৃষকের উৎপাদন খরচ বেড়ে হয়েছে ২০-২২ টাকা। প্রতিযোগিতার এ বাজারে আলুর দাম হঠাৎ বাড়ায় বিপাকে কৃষক থেকে শুরু করে সাধারণ ক্রেতা।
এক কৃষক বলেন, প্রতি কেজিতে ২০-২২ টাকা খরচ হয়ে গেছে। খৈল-সারের দাম বেশি তাই এর দাম বাড়ছে।
গেলো বছর যখন আলু স্বল্পতায় দাম বেড়েছিল সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আলু ওঠার পর ৩০ টাকা দাম নেমে এলেও বর্তমান ৫০-৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। ভোক্তারা বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের পদক্ষেপ চান।