বাজার
0

দ্বিতীয় বৃহত্তম চামড়া মোকাম নাটোরের চকবৈদ্যনাথে চলছে প্রস্তুতি

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চামড়ার মোকাম নাটোরের চকবৈদ্যনাথে কোরবানির পশুর চামড়া কেনার প্রস্তুতি নিচ্ছেন দুই শতাধিক ব্যবসায়ী। ঈদের আগে ট্যানারী মালিকদের কাছ থেকে বকেয়া টাকা পেলে প্রস্তুতি আরও ভাল হবে বলে জানান তারা। তবে লবণের বাড়তি দাম খরচ বাড়াবে চামড়া সংরক্ষণে। এদিকে, এবারই প্রথম চামড়া সংগ্রহের পর সংরক্ষণের জন্য মাদ্রাসাগুলোয় বিনামূল্যে লবণ সরবরাহ করেছে জেলা প্রশাসন।

বছরের মোট চাহিদার অন্তত ৫০ শতাংশ চামড়া সংগ্রহ হয় কোরবানি ঈদে। এর মধ্যে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ সরবরাহ করে নাটোরের চকবৈদ্যনাথের আড়তগুলো থেকে। তাই তো ঈদের দিন থেকে চামড়া সংগ্রহের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন এখানকার দুই শতাধিক ব্যবসায়ী।

ঢাকার বাইরে সবচেয়ে বেশি চামড়া মজুত হয় উত্তরের জেলা নাটোরের চকবৈদ্যনাথের আড়তগুলোয়। দেশের উত্তরাঞ্চল, দক্ষিণাঞ্চলসহ অন্তত ২৫ থেকে ৩০টি জেলার কাঁচা চামড়া আসে এখানে। বর্তমানে শুনশান অবস্থা বিরাজ করলেও কোরবানির ঈদের দিন বিকাল থেকে চামড়ার আড়তগুলো ভরে উঠবে কোলাহলে।

ভালমানের চামড়া পাওয়া যায় বলেই চকবৈদ্যনাথের আড়ত থেকে বছরজুড়েই চামড়া সংগ্রহ করেন ট্যানারি মালিকরা। তবে চাহিদার সিংহভাগ চামড়া সংগ্রহ হয় কোরবানি ঈদে। এতে জমে উঠে বেচা-কেনা। ঈদের আগে ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে বকেয়া টাকা পেলে প্রস্তুতি আরও ভাল হবে বলে জানান এখানকার ব্যবসায়ীরা।

চামড়া ব্যবসায়ীদের একজন বলেন, 'কোম্পানির কাছে আমাদের যে বকেয়া টাকা আছে তা যদি না পায় তাহলে আমাদের বড় ধরনের ক্ষতি হবে।'

আরেকজন বলেন, 'কোম্পানিগুলো ঈদের আগে টাকা দিলে আমরা প্রস্তুতি আরও ভালো করে নিতে পারবো।'

সম্প্রতি কাঁচা চামড়ার দাম বেঁধে দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ঢাকার বাহিরে গরু ৫০ থেকে ৫৫ টাকা বর্গফুট আর খাসির চামড়া ১৫ থেকে ১৮ টাকা। এছাড়া বকরিসহ অন্যান্য পশুর চামড়ার দাম ১২ থেকে ১৫ টাকা। তবে এবারও লবণ সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীরা। নাটোরে চাহিদার ৭৫ টন লবণের বিপরীতে মজুত রয়েছে ১০০ টন, তারপরও বাড়তি দাম। এতে চামড়া সংরক্ষণে খরচ বাড়ার শঙ্কা ব্যবসায়ীদের।

ব্যবসায়ীদের একজন বলেন, 'গতবার লবণ ছিল মণ ১ হাজার ৫০ টাকা করে এবার ১১শ’ ৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।'

গত বছরের তুলনায় এ বছর বেশি পশু কোরবানির আশা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির নেতাদের। এতে বাড়বে কাঁচা চামড়ার সরবরাহ। তাই এবার ঈদে গরুর চামড়া দেড় থেকে দুই লাখ পিস আর খাসি, বকরিসহ কোরবানির অন্যান্যে পশুর চামড়া দুই থেকে আড়াই লাখ পিস সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন চামড়া ব্যবসায়ীরা।

নাটোর জেলা চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের আহ্বায়ক লুৎফর রহমান লাল্টু বলেন, 'সবদিক দিয়ে যদি ঠিক থাকে তাহলে এবার আমরা ভালো ব্যবসা করতে পারবো।'

এছাড়া প্রতিবছর কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ করে স্থানীয় মাদ্রাসাগুলোও। কিন্তু কাঁচা চামড়া বিক্রি করতে গিয়ে পানির দামে বিক্রি করতে হয় তাদের। তাই এবার কাঁচা চামড়া সংগ্রহের পর লবণজাত করতে মাদ্রাসাগুলোয় বিনামূল্যে লবণ সরবরাহ করেছে জেলা প্রশাসন।

সব ঠিক থাকলে ঈদের দিন থেকে এক সপ্তাহে চকবৈদ্যনাথের আড়তে অন্তত ২০ কোটি টাকার লেনদেন হবে বলে আশা ব্যবসায়ীদের।

ইএ