বাজার
0

ঈদকে ঘিরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে কুমিল্লার অর্থনীতি

ঈদকে কেন্দ্র করে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে অর্থনীতি। কুমিল্লা নগরীতে ঈদবাজারে বিনিয়োগ প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা, যেখানে যুক্ত হয়েছে প্রবাসী আয়।

ঈদ ঘনিয়ে আসছে, কুমিল্লা নগরীর প্রাণকেন্দ্র কান্দিরপাড় লোকে লোকারণ্য। বিকল্প সড়কে চলছে যানবাহন, ঈদকে ঘিরে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে বেচাকেনা।

প্রিয়জনদের জন্য পছন্দের পণ্য কিনতে দোকানে দোকানে আসছেন ক্রেতারা। কারও অভিযোগ দাম বেড়েছে, কেউ বলছেন প্রিয়জনদের মুখে হাসি ফুটাতেই এই ছুটোছুটি। ফুটপাত থেকে বড় শপিংমল, ধনী কিংবা দরিদ্র- ঈদ অর্থনীতির চাকা ঘুরাতে সবাই ব্যস্ত।

ক্রেতারা বলেন, ‘বাচ্চাদের জন্যই মূলত কেনাকাটা করতে হয়। বিদেশ থেকে আমাদের আত্মীয়রাও টাকা পাঠাচ্ছেন। দাম একটু বেশি, তারপরও পছন্দমতো পোশাক কিনতে সবাই চেষ্টা করছেন।’

নগরীর প্রথম বহুতল বিপণিবিতান ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজায় সাড়ে ৩ শতাধিক দোকান রয়েছে। ক্রেতার চাপ সামলাতে হিমশিম অবস্থা ব্যবসায়ীদের। ঈদ উপলক্ষে প্রতিটি দোকানেই নতুন করে বিনিয়োগ করেছেন ব্যবসায়ীরা। চাহিদা মাথায় রেখে ভারত, পাকিস্তান, চীন ও থাইল্যান্ড থেকে আনা পোশাক, জুতা, কসমেটিকস, ব্যাগসহ নানা পসরা সাজিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

বিক্রেতারা বলেন, ক্রেতা চাহিদা বিবেচনা করে আমরাও পণ্য সংগ্রহ করেছি। আর বাজারে ক্রেতা থাকলেই আমরা খুশি হই।

নগরীতে প্রায় ২০ হাজার দোকান রয়েছে। ঈদ পণ্য তুলতে বেশিরভাগ দোকানিই বাড়তি পুজিঁ বিনিয়োগ করেছেন। যা টাকার অঙ্কে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। বড় শপিংমল থেকে শুরু করে প্রায় দোকানেই বাড়তি কর্মী নিয়োগ করেছেন ব্যবসায়ীরা। ঈদ বাজারে নতুন করে যুক্ত হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার কর্মী। ক্রেতাদের চাপ সামলাতে হিমশিম খেলেও বাড়তি আনন্দ বিক্রয়কর্মীদের মাঝে।

বিক্রয়কর্মীরা বলেন, অনেক ক্রেতা আসছেন। আমরা সাধ্যমতো ক্রেতাদের সহযোগিতা করছি। সবমিলিয়ে আমরা কাজের পাশাপাশি কাজও উপভোগ করছি।

ভোগ্যপণ্য, গৃহস্থালি ,পোশাক, জুতা, জুয়েলারি কিংবা প্রসাধনী পন্য কিনতে প্রতিদিন এ নগরীতে আসেন কয়েক লাখ মানুষ। তাই সব সড়কেই বেড়েছে যানবাহন। দুর্ভোগ কমাতে সার্বিক ব্যবস্থাপনা নিয়েছে প্রশাসন ও ব্যবসায়ী নেতারা।

কুমিল্লা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আতিক উল্লাহ খোকন বলেন, ক্রেতাদের সুবিধার জন্য আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি। এছাড়া ক্রেতারা যেন প্রতারণার শিকার না হন সেদিকেও নজর রাখছি।

কুমিল্লার ট্রাফিক ইন্সপেক্টর জিয়াউল চৌধুরী টিপু বলেন, ‘প্রতিটি সড়কে আমাদের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।’

নুয়ে পড়া অর্থনীতিতে গতি আনতে এই ঈদ উৎসব আশা জাগানিয়া। ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ পায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা। সমাজের ছিন্নমূল মানুষও ঈদের অর্থনৈতিক প্রবাহ থেকে বঞ্চিত হয় না। কুমিল্লার ঈদ অর্থনীতিতে স্পন্দন তৈরি করেছে প্রবাসীর পাঠানো রেমিট্যান্স।

চাকরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে কুমিল্লার প্রায় ১৩ লাখ প্রবাসীর পাঠানো অর্থ শুধু পরিবারের মুখেই হাসি ফুটাচ্ছে না, ঈদ অর্থনীতিতে ঝিলমিল আলোর রশনি ছড়াচ্ছে। যা অর্থনৈতিক অবকাঠামো পুনর্গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখছে।

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর