সারাবছর প্রসাধনীর বাজারে স্বাভাবিক লেনদেন থাকলেও ঈদ ঘিরে সেই বাজার বাড়ে দ্বিগুণের বেশি। জেলার বড় বাজারের পাইকারি দোকানে এখন ফর্দ লেখার ব্যস্ততা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত।
পাউডার, মেহেদি, সাবান, তেল, ফেসওয়াশ, শ্যাম্পুসহ সব পণ্যের চলছে জমজমাট বেচাকেনা। এরমধ্যে মেহেদি বেশি বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি দরে এসব প্রসাধনী জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে যাচ্ছে, সেখানে চলছে খুচরা বিক্রি। পাইকারি ক্রেতারা বলছেন, চলতি বছর দেশীয় প্রসাধনীর চাহিদা তুলনামূলক বেশি।
পাইকারি বিক্রেতারা বলেন, ‘বিদেশি প্রোডাক্টের দাম অনেক বেশি হওয়ায় দেশি পণ্য বেশি বিক্রি হচ্ছে।’
আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশে ত্বক সচেতন মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। সেই সঙ্গে প্রসাধনীর বাজার বড় হচ্ছে। বর্তমানে বাজারে দেশীয় প্রসাধনী সামগ্রী আধিপত্য বিস্তার করছে।
পাইকারি বিক্রেতা ও জেলার পরিবেশকরা বলছেন, ‘দিন দিন বড় হচ্ছে দেশীয় প্রসাধনীর বাজার। এতে আমদানি নির্ভরতা কমছে। তবে অনুমোদনহীন বা চোরাই পণ্য দেশে ঢোকার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।
নরসিংদীর মমতাজ কসমেটিকসের পরিবেশক ও এইচএস স্টোরের সত্ত্বাধিকারী মো. হানিফ ভূঁইয়া বলেন, ‘সাধারণত আমি মমতাজের পণ্য বিক্রি করি। আগে আমাদের অর্ডার খুবই কম ছিল। এখন মার্কেটে গেলে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে। মেহেদি সিজন আসলে অনেক বিক্রি হয়।’
আরেকজন বলেন, ‘আগের তুলনায় এখন দেশি পণ্য বেশি বিক্রি হচ্ছে। কারণ, দেশি পণ্যের গুণগত মান এখন ভালো এবং কোম্পানিও চেষ্টা করছে যেন প্রোডাক্ট ভালো হয়।’
ঈদ এলেই নকল ও অনুমোদনহীন পণ্য ক্রেতাদের শঙ্কায় ফেলে। তাই মানসম্মত পণ্য বিক্রির কথা বলছেন তারা। আর বিক্রেতারা বলছেন, দেশীয় পণ্যের প্রতি ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে প্রচারণা বাড়াতে হবে।
খুচরা বিক্রেতারা বলেন, ‘থাইল্যান্ডের প্রোডাক্ট অনেক ভালো কিন্তু কাস্টমারের সন্দেহ থাকে অর্জিনাল কিনা বা চকবাজার থেকে তৈরি হয়েছে কিনা। আমি কোম্পানির পণ্য কিনি আরেকজন চোরাই পণ্য কিনে, এখানেই দামের পার্থক্য হয়ে যায়।'
খুচরা ক্রেতারা বলেন, ‘ঈদের সময় মেহেদির চাহিদা বেশি থাকে। সেক্ষেত্রে দেশীয় পণ্যের প্রচার বাড়ানো প্রয়োজন। এতে করে মানুষ দেশি পণ্যের দিকে বেশি ঝুঁকবে।'
জেলার ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, ঈদ ঘিরে নরসিংদী জেলায় অন্তত ১শ’ কোটি টাকার প্রসাধনী সামগ্রীর বাণিজ্য হবে।