নরসিংদীর শিবপুরের বিলপাড়ের কৃষক রাজু মিয়া। পারিবারিকভাবেই কয়েক প্রজন্ম ধরে কৃষির সাথে সম্পৃক্ত। তবে, তার সন্তানসহ পরিবারের কেউই এখন কৃষিকে পেশা হিসেবে নিতে চান না। রাজু মিয়া কৃষিকাজ ছেড়ে দিলে কৃষি কিংবা কৃষক এই শব্দটিই তার পরিবার থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে। কিন্তু, কেন কৃষিতে এত অনীহা?
শিবপুরের কৃষক রাজু মিয়া বলেন, ‘কৃষি কাজের জিনিসপত্রের দাম বেশি। ফসল আবাদ করার পড়েও আমরা খুব একটা লাভ করতে পারি না।’
রাজু মিয়ার মতো অবস্থা জেলার বাকি কৃষকদেরও। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, ২০১৮ সালের জরিপে জেলায় পেশাদার কৃষক ছিলো ৩ লাখ ৪০ হাজার ৯৭০ জন।
২০১৮ সালের আগে ও পরের কোনো পরিসংখ্যান দিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। তবে, সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে ধারণা করা হচ্ছে বর্তমানে জেলায় কৃষকের সংখ্যা ৩ লাখের কম। ১ যুগ আগে যা ছিল ৪ লাখের বেশি।
সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও কৃষিখাতে নির্ভরশীল পরিবারে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা, আয়ের বৈষম্য, কৃষি যান্ত্রিকীকরণের কারণে কাজের ক্ষেত্র কমে যাওয়া, জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন কারণে কৃষি পেশা ছাড়ছে মানুষ।
সার-কীটনাশকের বাড়তি দামও মরার ওপর খারার ঘাঁ। কৃষিকাজ ছেড়ে কেউ পাড়ি জমাচ্ছেন প্রবাসে, কেউ হচ্ছেন গার্মেন্টস কর্মী কিংবা রিকশাচালক।
বাজেট বাড়লেও কেন কমছে কৃষক এমন প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর নেই কৃষি কর্মকর্তাদের কাছে। তবে, কৃষক কমছে এটা স্বীকার করে জানালেন, উৎপাদন বৃদ্ধির কথা।
নরসিংদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আজিজুর রহমান বলেন, ‘কৃষি জমি যেহেতু আছে তাই কৃষক একবারে হারিয়ে যাবে না। আমাদের হয়ত ফরম্যাট পরিবর্তন হবে। আগে যেভাবে কৃষক কাজ করতো হয়ত সেভাবে কাজ না করে আধুনিক প্রযুক্তি, কলা কৌশল এবং জাত ব্যবহার করবে।’
বিবিএসের শ্রমশক্তি জরিপের তথ্যমতে, বছরে পুরো দেশে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ কৃষি পেশা ছেড়েছে।