গেল এক সপ্তাহ ধরে বাজারে চালের দাম বাড়ছে। মোটা থেকে চিকন, আতপ থেকে সিদ্ধ। সব ধরনের চালের বস্তায় দাম বেড়েছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত। ফলে প্রভাব পড়েছে চট্টগ্রামের বৃহৎ চালের বাজার পাহাড়তলীতে।
বর্তমানে স্বর্ণা চাল প্রতি বস্তা ২,৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মিনিকেট সেদ্ধ ২,৬৫০ টাকায়, মিনিকেট আতপ ২,৮৫০ টাকা, পাইজাম আতপ ২,৫০০ টাকা, ৫২ আটাশ ২,৬৫০ টাকা, জিরাশাইল ৩,৩০০ টাকা, নাজিরশাইল ৩,৬০০ টাকা এবং কাটারি আতপ ৩,৪৫০ টাকা প্রতি বস্তা বিক্রি হচ্ছে। আড়তদাররা বলছেন মিল পর্যায়ে দাম বৃদ্ধির কারণেই আড়তেও দাম বেড়েছে।
আড়তদাররা বলেন, 'সার, কীটনাশক ও মজুরির দাম বাড়ার কারণে ধানের উপর প্রভাব পড়েছে। বড় বড় কোম্পানিরা মার্কেট থেকে প্রচুর ধান-চাল সংগ্রহ করছে সারাবছর ব্যবসা করার জন্য। তারা এভাবে মজুত করলে বাজারে স্বাভাবিকভাবেই সংকট দেখা দিবে। এ জন্য চালের দাম অতিরিক্ত বাড়ছে।'
তবে এখানকার আড়তদাররা চালের দাম বৃদ্ধির এই প্রবণতাকে অস্বাভাবিক বলছেন। তারা বলছেন, এখন আমনের ভরা মৌসুম। এসময়ে কখনোই দামের এমন ঊর্ধ্বগতি দেখা যায় না। কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান সারা বছরের জন্য ধান চাল মজুদ করায় বাজারে সংকট দেখা দিয়েছে বলে দাবি তাদের। আর সংকটকে পুঁজি করে দাম।
আড়তদারদের একজন বলেন, 'আমরা ইচ্ছা করলে দাম বাড়াইতেও পারি না আবার কমাইতেও পারি না। এটা মোকামে পারা যায়। যেখান থেকে চাল উৎপাদন হয়ে সারাদেশে আসে।'
তবে দাম বৃদ্ধির প্রবণতা এক সপ্তাহ পর এসে কিছুটা নিম্নমুখী। সরকারের পদক্ষেপ এবং অভিযানে দামের এ নিম্নমুখী প্রবণতা বলে মনে করেন আড়তদাররা। তবে ছোট ছোট মিল, কর্পোরেট গুদামে চাল মজুদ করে রাখার প্রবণতা বন্ধ করা না গেলে এর সুফল মিলবে না বলেও দাবি আড়তদারদের।
অপর এক আড়তদার বলেন, 'মৌসুম আসলেই তারা ধান মজুত করে। বিশেষ কোন কর্পোরেট গ্রুপ, বিভিন্ন হাস্কিং মিল এবং মধ্যস্বত্বভোগীরা ধান মজুত করলে মার্কেটে ধানের সংকট দেখা দিলে দাম বেড়ে যায়। তখন অটো মিলাররা এমনিতেই চালের দাম বাড়িয়ে দেয়। তখন বাজারে বেড়ে যায়।'
তবে সবধরণের চালের দাম বাড়ায় মূলত কষ্টে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। মোটা চালও সাধ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখতে দেখতে। এমন পরিস্থিতে মোটা চালের বিক্রিও কমেছে। নিম্নআয়ের মানুষকে স্বস্তি দিতে ওএমএস এর মাধ্যমে চাল বিক্রির পরামর্শ দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরাই।