ফ্যাশন
জীবনযাপন
বৈশাখের পোশাকের রং কেন লাল-সাদা?
চারদিকের সাজসজ্জা আর প্রস্তুতিই জানান দিচ্ছে বাংলা নববর্ষের। প্রকৃতির সাজে আর খেয়ালে বর্ষবরণের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে। আর সেই সাথে পোশাকের বর্ণিল ছোঁয়াও থাকবে নববর্ষের সাজে। বৈশাখ নিয়ে আপনার আয়োজনের কথা আসলে সবার প্রথমেই আসবে পোশাকের কথা।

পান্তা-ইলিশের মতই বৈশাখের পোশাকের নির্ধারিত রং হয়ে উঠেছে লাল-সাদা। কিন্তু এতো রং থাকতে বৈশাখে এই লাল-সাদাই কেন? পান্তা ইলিশ খাওয়ার মতো লাল-সাদা পোশাকও কী বৈশাখের একেবারে নিজস্ব ট্রেন্ড?

 

বৈশাখের চিরায়ত রংয়ে সাদা-লালের চল কেন বা কবে থেকে, এ নিয়ে রয়েছে মতভেদ। ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে বৈশাখের আয়োজন ছিল হালখাতাকেন্দ্রিক। হালখাতার মোড়কের রং লাল এবং ভেতরের পাতার রং সাদা। সেখান থেকে বৈশাখে লাল-সাদার এই কম্বিনেশনটি আসতে পারে।

 

আবার বৈশাখে সনাতন ধর্মের পূজা-পার্বণে সাদা জমিনে লাল পাড়ের শাড়ি পরা থেকেও এই চল আসতে পারে। বাঙালির যেকোনো উৎসবেই লাল রঙের আধিপত্য দেখা যায়।

 

যদিও এই কারণগুলোর পিছনে গ্রহণযোগ্য তেমন কোন যুক্তি নেই। অনেক সম্ভ্রান্ত পরিবারে মেয়েদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লাল পাড়ের সাদা শাড়ি প্রচলন ছিল। ধীরে-ধীরে তা উৎসবের পোশাকে পরিণত হয়ে গেছে।

 

যেহেতু বৈশাখের প্রথম দিন প্রায় সময়ই বেশ গরম থাকে, তাই স্বস্তির কারণেও সাদা-লাল সার্বজনীনতা পেয়েছে।

 

বৈশাখে লাল-সাদা প্রচলনের সঙ্গে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটও জড়িয়ে রয়েছে। মোগল আমলে বাদশাহকে খাজনা দেওয়ার সময় লাল সালু কাপড়ে বেঁধে দেয়া হতো। সেই থেকে লাল রং বৈশাখে চলে এসেছে বলেও মনে করা হয়। অন্যদিকে সাদা হচ্ছে শুভ্রতার প্রতীক। তাই নতুন বছর নতুন আশার প্রতীক হিসেবে লাল-সাদার সমন্বয় করা হয়।

 

তবে ফ্যাশন হাউসগুলো বৈশাখকে কেন্দ্র করে প্রতি বছরই পোশাকে নানা পরিবর্তন নিয়ে আসে। এরই ধারাবাহিকতায় রঙে যেমন বৈচিত্র্য আসে, তেমনি পরিবর্তন এসেছে ফ্যাশনেও। বৈশাখে প্রচন্ড গরম অনুভূত হয়। গরমে আরামদায়ক রং সাদা। কারণ সাদাকাপড় দ্রুত শরীরের তাপ শোষণ করে।

 

ফ্যাশন হাউজগুলো যখন থেকে বৈশাখের পোশাক নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করে, তখন থেকেই লাল-সাদাতেই আটকে ছিল। পরবর্তীতে অন্যান্য রঙ ব্যবহার করা শুরু হয়। তবে লাল-সাদা রংয়ের আবেদনই আলাদা।

 

কেফা