ফ্যাশন
জীবনযাপন

এক পোশাকের দাম তিনশ’ কোটি টাকা

একটি পোশাকের দাম কত হতে পারে? কয়েক হাজার কিংবা লাখ টাকা! কিন্তু আপনি কি জানেন পৃথিবীতে এমন পোশাক তৈরি হয়েছে যার মূল্য মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার। টাকার হিসেবে যা কয়েক কোটি থেকে কয়েকশ' কোটি টাকা পর্যন্ত! চলুন জেনে নেই ফ্যাশন দুনিয়ার এমন কিছু পোশাক সম্পর্কে।

. দ্য নাইটিংগ্যাল অব কুয়ালালামপুর

২০০৯ সালে তৈরি হয়েছিল বিশ্বে এখনো পর্যন্ত সবচেয়ে দামি পোশাক। বিখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার ফয়সাল আবদুল্লাহ এটি তৈরি করেছিলেন ক্রিমসন সিল্ক ও টাফেট্টা কাপড়ে। ১৪ শতকের পারস্যের কবি মোহাম্মদ হাফেজ ই সিরাজির ‘দ্য রোজ এন্ড দ্য নাইটিংগেল’ কবিতা থেকে অনুপ্রাণিত এই পোশাকে ব্যবহার হয়েছে ৭০ ক্যারটের ৭৫১ টি হীরা। 

২০০৯ সালের ৩ এপ্রিল মালয়েশিয়ায় ‘স্টাইলো ফ্যাশন গ্রান্ড প্রিক্স কুয়ালালামপুর’ নামের একটি চ্যারিটি শোতে এই পোশাক পরে র‌্যাম্পে হাঁটেন মালয়েশিয়ান অভিনয়শিল্পী কাভিতা সিধু। পোশাকটির নাম দেওয়া হয় ‘নাইটিংগ্যাল অব কুয়ালালামপুর’। সেই শো'তে এই পোশাকের দাম নির্ধারণ হয়েছিল ৩০ মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশি টাকায় বর্তমানে যা তিনশ' কোটি টাকার বেশি।

২. আবায়া

দামের দিক দিয়ে দ্য নাইটিংগ্যাল অব কুয়ালালামপুরের পরই যে পোশাকটি আসে তা হলো ব্রিটিশ ডিজাইনার ডেবি উইংহামের তৈরি ‘আবায়া’। এটি বিশ্বের সবচেয়ে দামি আবায়া আর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যয়বহুল পোশাক।

উত্তর আফ্রিকা ও আরব নারীদের ঐতিহ্যবাহী পোশাকের অনুপ্রেরণায় তৈরি হয়েছে এটি। এই পোশাকে ডিজাইনার তার নৈপুণ্য দেখিয়েছেন বড় লাল হীরা, বিরল ও দামি পাথর ব্যবহারের মাধ্যমে। যারমধ্যে শুধু লাল হীরাগুলোর দাম ৭.৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আরও আছে দুই ক্যারটের ৫০ টি কালো হীরা, ১,৮৯৯ টি সাদা কালো হীরা, এক হাজার রুবিসহ তিন হাজার দামি পাথর। পাথরগুলো সেলাই করা হয়েছে ১৪ ক্যারট স্বর্ণের সুতা দিয়ে।

পোশাকটির দাম ১৭.৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, বর্তমান বাজারে যা প্রায় দুইশ কোটি টাকার সমান। ২০১৩ সালে দুবাইয়ে পোশাকটির প্রদর্শনী করেন ডেবি। তবে এটি বিক্রির জন্য নয় বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন এই ডিজাইনার।

৩. মার্টিন কাট্জ ও রিনি স্ট্রস’র তৈরি বিয়ের পোশাক

যখন নামীদামি ফ্যাশন ব্রান্ড, বিখ্যাত জুয়েলারের সঙ্গে মিলে কাজ করে তখন অবশ্যই যাদুকরী কিছুই হয়। বিখ্যাত জুয়েলার মার্টিন কাট্জ ও ফ্যাশন ডিজাইনার রিনি স্ট্রসের এই কাজটি ঠিক এমনই। ২০০৬ সালে এই দুই শিল্পী গাউনটি তৈরি করেন। পুরো পোশাকটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ১৫০ ক্যারটের হীরা। সেইসময় এর দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৬ দশমিক ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। টাকায় এটি এখন প্রায় ১৭৮ কোটি’র সমান।

৪. হানি এল বেহারি’র তৈরি বিয়ের পোশাক

মিশরের দামীদামী ব্র্যান্ড হানি এল বেহারি তৈরি করেছে বিশ্বের চতুর্থ সর্বোচ্চ দামি পোশাক। ২০২০ সালে প্যারিসে একটি ফ্যাশন শো’তে প্রদর্শিত হয় বিয়েতে নববধূর জন্য তৈরি এই পোশাকটি।

শত শত ডায়মন্ড আর দামী পাথর দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে এটি। সম্পূর্ণ পোশাকটি তৈরি করতে সময় লেগেছে ৮০০ ঘণ্টা। দাম ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার যা প্রায় ১৬৫ কোটি টাকা।

হানি এল বেহারি একজন মিশরীয় ফ্যাশন ডিজাইনার যিনি ব্যয়বহুল বিয়ের পোশাক তৈরির জন্য বিখ্যাত। বিশ্বের চতুর্থ সর্বোচ্চ দামি পোশাকটি তিনি তৈরি করেছিলেন মিশরীয় পরিবারের এক নববধূর জন্য।  

৫. রাণী লেটিজিয়ার রাজকীয় বিয়ের পোশাক

বিশ্বের দামি পোশাকের তালিকায় স্পেনের রানী লেটিজিয়ার রাজকীয় বিয়ের পোশাকটি আছে পঞ্চম স্থানে। সিল্কের এ পোশাকটিতে স্বর্ণের সুতা দিয়ে হাতে সেলাই করে ফ্লোরাল ডিজাইন করা হয়েছে। ২০০৪ সালে তৈরি এ পোশাকটির মূল্য ১০.৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, টাকার হিসেবে যা প্রায় ১১৭ কোটির সমান। এটি সবচেয়ে দামি রাজকীয় বিয়ের পোশাক হিসেবে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে তালিকাভুক্ত হয়েছে।

কেফা

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর