সদ্য বিবাহিত পোশাক শ্রমিক হাসান স্ত্রীকে নিয়ে ঈদ উদযাপনে ভোলায় আসেন। ৩১ মার্চ ঈদুল ফিতরের দিন দুপুরে পাশের বাড়ির এক গৃহবধূ হাসানদের বাড়ির ফ্রিজে মাংস রাখতে যান। এ সময় ওই নারীকে হাসান জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ করেন ওই নারী। পরে ওই গৃহবধূর পরিবারের সদস্যরা হাসানকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে।
গৃহবধূ বলেন, 'আমি অনেক রিকুয়েস্ট করেছি, আমার কথা শোনেনি। আমাকে অনেক জোরজুলুমের পর আমাকে গলায় ছোরা ধরছে।'
গৃহবধূর মা বলেন, 'আমার এই মেয়ের দুইটা বাচ্চা আছে। একটা সাত বছরের আবকটা তিন বছরের।'
আহত হাসানকে ওইদন বিকেলে ভোলার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাত ৮টার দিকে হাসপাতাল থেকে হাসানকে ভোলা সদর মডেল থানার হাজতখানায় নেয়া হয়। সেখানেই পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয় হাসানের।
থানার সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, সোমবার (৩১ মার্চ) রাত পৌনে ১২টার দিকে হাজতখানায় থাকা জায়নামাজ ছিঁড়ে এদিক ওদিক ঘুরতে থাকে হাসান। এক পর্যায়ে হাজতখানার ওয়াশরুমে যান তিনি। কিছুক্ষণ পর সেখান থেকে গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। হাসপাতালে নিলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
নিহতের স্বজনদের দাবি পুলিশি হেফাজতে থাকা অবস্থায় হাসানের মৃত্যু অস্বাভাবিক এবং চক্রান্তমূলক। পূর্ববিরোধের জেরে ধর্ষণের অভিযোগ এনে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ তাদের।
হাসানের স্বজন বলেন, 'গোস্তের কথা বলে ঘরে ঢুকিয়ে বলে নারী নির্যাতন করছে। আমার ছেলের যদি অপরাধ হইতো তাহলে আইনে দিতি, আইনে বিচার হইতো।'
হাসানের স্ত্রী বলেন, 'আমার স্বামী এটাও বলছে, আমি যদি অন্যায় কাজ করে থাকি তাহলে মেয়েরে নিয়ে আসেন আমারেও নেন। পরীক্ষা করেন, কিন্তু তারা কিছুই করবে না।'
তবে পুলিশ বলছে ঘটনাটি আত্মহত্যাই।
ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু শাহাদাৎ মো. হাচনাইন পারভেজ বলেন, 'ধর্ষণ সম্পর্কিত অভিযোগ ছিল বলেই আমরা তাকে পুলিশের হেফাজতে নিয়ে আসি। তাকে থানা হাজতে রাখা হয়েছিল। এবং এ সংক্রান্ত মামলা প্রক্রিয়াধীন ছিল। এর মধ্যে আসামি হাজতের ভেতরেই আত্মহত্যা করে। বিষয়টি এখন সম্পূর্ণ অপমৃত্যু মামলা রুজু হয়েছে।'
প্রকৃত ঘটনা উন্মোচনের স্বার্থে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দাবি করেছেন নিহতের স্বজনরা।