দক্ষিণ আমেরিকা
বিদেশে এখন
0

দুর্নীতি তদন্তে পেরুর প্রেসিডেন্টের বাসভবনে অভিযান

রোলেক্স ঘড়ির কেলেঙ্কারিতে ফাঁসলেন পেরুর প্রেসিডেন্ট। দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে বেড়েছে তার সম্পদ। গণমাধ্যমে তার বিলাসী জীবনের খবর প্রকাশের পর তার সম্পদ পর্যালোচনার উদ্যোগ নেয়া হয়। দেশটির সুপ্রিম কোর্টের অনুমতিতে তার বাসভবনে চলে অভিযান।

২০২১ সালে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে পেরুর ক্ষমতায় আসেন দিনা বলুয়ার্তে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে হন পেরুর প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট। এরপর থেকেই তার বিলাসী জীবনযাপন নিয়ে খবর আসতে থাকে। বিভিন্ন সরকারি অনুষ্ঠানে তার হাতে থাকতো দামি সব ঘড়ি।

সম্প্রতি হাতে রোলেক্স ঘড়িসহ প্রেসিডেন্টের বেশকিছু ছবি লা এনসাররোনা নামে স্থানীয় একটি গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়। এগুলো তার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরের ছবি। যা নিয়ে তৈরি হয় ব্যাপক সমালোচনা।

মূলত এরপরই নড়েচড়ে বসে কর্তৃপক্ষ। প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে রোলেক্স ঘড়িগুলোর তথ্য গোপন করার অভিযোগ আনা হয়। এছাড়া প্রেসিডেন্টের পদে থেকে গত দুই বছরে দিনা বলুয়ার্তের যে সম্পদ আয় করেছেন, তা তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

দেশটির সুপ্রিম কোর্টের অনুমতি নিয়ে দুর্নীতি তদন্তে প্রেসিডেন্টের বাসভবনে চলে হয় অভিযান। ২০ জন সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে ২০ পুলিশ সদস্য অভিযানে অংশ নেন। পুরো অভিযান স্থানীয় একটি টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়।

দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও তিনি এখনই পদত্যাগ করছেন না। সব অভিযোগ অস্বীকার করে প্রেসিডেন্ট জানান, এসব ঘড়ি তার নিজের টাকায় কেনা। এ ধরনের অভিযানকে অসাংবিধানিক বলেছেন পেরুর প্রধানমন্ত্রী গুস্তাভো আদ্রিয়ানজেন।

পেরুর প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তে বলেন, 'একজন প্রেসিডেন্টের বাসভবনে এ ধরনের অভিযান দেশের শাসন ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করবে। প্রেসিডেন্টকে পরিকল্পিতভাবে আক্রমণ করেছে বিরোধীরা। একজন প্রেসিডেন্ট কী ব্যবহার করেন বা না করেন? তা কোন গণমাধ্যমের আলোচনার বিষয় হতে পারে না।'

যদিও প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে অভিযান নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। দিনা বলুয়ার্তের জনপ্রিয়তা এমনিতেই কমতির দিকে। এখন দুর্নীতির এমন খবরে নতুন করে রাজনৈতিক সংকটে পড়লেন তিনি।

তবে অভিযোগ প্রমাণিত হলেও এখন তার বিচার শুরু করা যাচ্ছে না। পেরুর সংবিধান অনুযায়ী ২০২৬ সালের জুলাই মাসে তার প্রেসিডেন্ট পদের মেয়াদ শেষ হলে বা অভিশংসন পর্যন্ত বিচারের অপেক্ষায় থাকতে হবে।

তার দাবি ১৮ বছর বয়স থেকে কঠোর পরিশ্রম করে উপার্জনের টাকা দিয়ে সব জিনিস কিনেছেন। কারণ সরকারি বেতন ৪ হাজার ৩০০ মার্কিন ডলারে এত দামি সব ঘড়ি কেনা অসম্ভব।

তবে রাজনীতিতে আসার আগে তিনি একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধান ছিলেন। সেখানে বেতন ছিল মাসে ১ হাজার মার্কিন ডলার। বর্তমানে এক ডজনেরও বেশি রোলেক্স ঘড়ি আছে ৬১ বছর বয়সী এ প্রেসিডেন্টের কাছে।