মার্কিন শুল্কনীতির জবাবে কানাডার পাল্টা শুল্কারোপ

ফাটল ধরছে প্রতিবেশী দুই দেশের সম্পর্কে

.
উত্তর আমেরিকা
বিদেশে এখন
0

৪ ফেব্রুয়ারি থেকেই কার্যকর হচ্ছে কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর ২৫ শতাংশ মার্কিন শুল্কনীতি। এর পাল্টা জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের সাড়ে ১৫ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি মূল্যের পণ্যের ওপরও ২৫ শতাংশ পাল্টা আমদানি কর আরোপ করতে যাচ্ছে কানাডা। ফ্রি ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট থেকে বেরিয়ে দুদেশের পাল্টাপাল্টি এই উচ্চ শুল্কারোপে ফাটল ধরছে প্রতিবেশী এ দুদেশের সম্পর্কে।

হামাস-ইসরাইল যুদ্ধবিরতি কার্যকর ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইউক্রেনকে রসদ না পাঠানোর ঘোষণায় বিশ্বজুড়ে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অস্ত্র-যুদ্ধ বন্ধে তার প্রশংসনীয় অবদান থাকলেও ক্রমেই বাণিজ্যযুদ্ধের দিকে ঝুঁকছেন নয়া এই মার্কিন কাণ্ডারি।

গেল তিন দশকের বেশি সময় ধরে চলা আসা মুক্তি বাণিজ্য বা শুল্কমুক্ত বাণিজ্য চুক্তি থেকে বেরিয়ে এসে কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর উচ্চ হারে আমদানি কর আরোপ করছেন ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিনই এ বিষয়ে নির্বাহী আদেশ দেন তিনি।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ ও চীনা পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্কারোপ করা হবে। এছাড়াও, কানাডার জ্বালানি তেলের ওপর আরোপ করা হবে ১০ শতাংশ শুল্ক। আসছে ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে এ আদেশ কার্যকর হবে বলেও জানায় হোয়াইট হাউজ।

ট্রাম্পের উচ্চ হারে শুল্কারোপের বিষয়টিতে বেশ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায় কানাডা ও মেক্সিকো সরকার। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপের কড়া জবাব দেয়ার হুঁশিয়ারিও দেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।

এরই অংশ হিসেবে এবার প্রাথমিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সাড়ে ১৫ হাজার কোটি ডলারেও বেশি মূল্যের পণ্যের ওপর পাল্টা ২৫ শতাংশ শুল্কারোপের ঘোষণা দিলেন ট্রুডো। ক্যাবিনেট সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তিনি। মঙ্গলবার থেকেই তা কার্যকরের নির্দেশও দেন কানাডীয় প্রধানমন্ত্রী।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, ‘এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করতে চাই। তারা যদি ইচ্ছাকৃতভাবে কানাডার ক্ষতি করতে চায়, তাহলে কিছু বলার নেই। তবে এতে সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে মার্কিনদের ওপর। খাদ্যপণ্য ও গ্যাসের দর বাড়িয়ে দিবো। এতে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্যের দর আরও বাড়বে।’

ট্রুডোর এ সিদ্ধান্তে নেতিবাচক প্রভাব পরতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের বিয়ার, ওয়াইন, ফল ও ফলের জুস, সবজি, সুগন্ধি, জামা-কাপড়, জুতাসহ গৃহস্থালি বিভিন্ন পণ্যের বাজারে। এছাড়াও ফার্নিচার ও প্লাস্টিক পণ্যের আমদানিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশটির।

এদিকে, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কুইবেক ও ব্রিটিশ কলাম্বিয়াসহ কানাডার বেশ কয়েকটি প্রাদেশিক সরকার। যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন, বিষয়টি ততোটা সহজও হবেনা কানাডার জন্য। কারণ দেশটির মোট আমদানির ৭৫ শতাংশই যায় যুক্তরাষ্ট্রে। আর তাই বাণিজ্যক্ষেত্রে ট্রাম্পের এমন হঠকারী সিদ্ধান্ত দুদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে চির ধরাবে বলেও মনে করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী।

এদিকে, ট্রাম্পের এ বাণিজ্যযুদ্ধে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর হয়ে লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লদিয়া শেইনবাম। এছাড়াও, ১০ শতাংশ শুল্কারোপে ক্ষুব্ধ চীনও।

এএম