উত্তর আমেরিকা
বিদেশে এখন
0

ইউরোপ-মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে নতুন আশা জাগাচ্ছে ট্রাম্পের জয়

ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঐতিহাসিক জয়ে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে নতুন আশার সঞ্চার হবে বলে আশা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। যদিও উদ্বেগে রয়েছে চীন ও তাইওয়ানবাসী, আগামীতে অন্যান্য দেশের সঙ্গে কেমন হবে ট্রাম্পের রাজনৈতিক কূটনীতি-তা নিয়ে ব্রিটেনসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাসিন্দাদের রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।


এভাবেও ফিরে আসা যায়। রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তনে অনন্য নজির গড়লেন ৭৮ বছর বয়সী ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭ তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইনেই আস্থা রাখলেন মার্কিনরা।

ট্রাম্পের এই জয়কে অসাধারণ আখ্যা দিচ্ছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। লন্ডনের চ্যাথাম হাউস থিঙ্কট্যাঙ্কের পরিচালক ব্রনওয়েন ম্যাডক্স মনে করেন, ইউক্রেন ও মধ্যপ্রাচ্য ইস্যু সমাধানে আগামীতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন ট্রাম্প। যুক্তরাজ্যসহ চীনের সাথে সম্পর্ক জোরদারের পাশাপাশি বাণিজ্যিক সর্ম্পক বেগবান হবে বলেও আশা এই বিশ্লেষকের।

লন্ডনের চ্যাথাম হাউস থিঙ্কট্যাঙ্কের ডিরেক্টর এবং সিইও ব্রনওয়েন ম্যাডক্স বলেন, ‘ট্রাম্প ইসরাইলের একজন বড় সমর্থক। আমি নিশ্চিত নই যে সেই সম্পর্কটি কোথায় যাবে, ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে কোনো নতুন যুদ্ধ শুরু হয়নি এবং তিনি শেষ করতে চান। মধ্যপ্রাচ্য দ্বন্দ্ব যে মুহূর্তে আছে, আমি মনে করি তিনি নেতানিয়াহুর উপর চাপ প্রয়োগসহ এই দ্বন্দ্বটি শিগগিরিই বন্ধ করতে পারবেন। আশা করছি যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো ট্রাম্পের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সর্ম্পক বজায় রাখবে।’

যদিও ট্রাম্পের এই জয়ে চীনের সঙ্গে সর্ম্পক উন্নয়নে কোন ফায়দা দেখছেন না বেইজিংবাসী। বাণিজ্যসহ চীনের সঙ্গে বৈরিতা সম্পর্কের কোন সমাধান হবে না বলে আশঙ্কা তাদের। শুধু চীন নয়, ট্রাম্প আবার ক্ষমতায় আসায় উদ্বিগ্ন তাইওয়ানবাসীও। যদিও তাদের আশা চীনের সঙ্গে তাইওয়ানের সর্ম্পক উন্নয়নে জোড় দিবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

চীনের এক নাগরিক বলেন, ‘আগামীতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি চীনের অর্থনীতি এবং বাণিজ্যের পক্ষে অনুকূল নাও হতে পারে কারণ আমি নিজে অর্থনীতি এবং বাণিজ্য নিয়ে পড়াশোনা করেছি। চীনের রপ্তানি পণ্যের শুল্কারোপ নিয়ে চিন্তিত।’

আরেক নাগরিক বলেন, ‘বাইডেন যখন দায়িত্বে ছিলেন, তখনও চীন-মার্কিন সম্পর্ক খুব ভালো ছিল না। যেই নির্বাচিত হোক না কেন, তাতে খুব বেশি পরিবর্তন আসবে না। ট্রাম্প যা বলেন তাই করেন। দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্কের ভালো-মন্দ থাকবেই।’

এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হওয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাসিন্দারাও। যুদ্ধ বন্ধে আগামীতে ট্রাম্প উদ্যোগী হবে বলে আশা তাদের।

মধ্যপ্রাচ্যের এক নাগরিক বলেন, ‘ট্রাম্প তার সমাবেশে বলেছিলেন, তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত বন্ধ করবে, আর এ কারণে ট্রাম্পই সেরা বিকল্প।’

এদিকে ইরানের নাগরিকদের শঙ্কা, ট্রাম্প জয়ী হওয়ায়, নতুন করে তেহেরানের বিরুদ্ধে আগামীতে আসতে পারে আরও নিষেধাজ্ঞা। যদিও সবকিছু মোকাবিলার জন্য ইরান প্রস্তুত বলেও জানান তারা।

একজন ইরানি নাগরিক বলেন,‘আমি সত্যিই খুশি ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি এমন একজন মানুষ যিনি সিদ্ধান্তমূলক আচরণ করেন, তিনি তার লক্ষ্যে দৃঢ় থাকেন এবং যা করতে চান ঠিক তাই করেন। ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আসলেও আশা করবো সংঘাত বন্ধে তিনি কাজ করবেন।’

এদিকে, ট্রাম্পের জয়ে খুশি নয়, ব্রিটেনবাসী। নারীদের ক্ষমতায়নে মার্কিনদের কখনও আস্থা নেই তা আবারও প্রমাণ হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তারা।

লন্ডনের একজন বলেন, ‘আমি মনে করি আমেরিকান জনগণ অস্থির, এটা সত্যি। আমি বেশ দুঃখবোধ করছি। আপনি কখনোই আমেরিকানদের ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারবেন না। ট্রাম্পের জন্য শুভকামনা।’

যে যাই বলুক, যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি বয়সে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েও রেকর্ড গড়েছেন ট্রাম্প। আগামী চার বছর তার নিয়ন্ত্রণেই থাকছে হোয়াইট হাউজের মসনদ।

এএম