গত জুলাইয়ের ২১ তারিখ নির্বাচন থেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সামনে আসে ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিসের নাম। ডেমোক্র্যাট অর্থদাতাসহ অন্তত অর্ধশত সিনেটর কামালাকে সাদরে গ্রহণ করলেও ভোটারদের প্রতিক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ ছিল নীল শিবিরে।
নির্বাচনের আগে রিপাবলিকানদের আত্মবিশ্বাস আর ডেমোক্র্যাটদের ব্যাকফুটে থাকা নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা যে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে চেয়েছেন তার সাথে দ্বিমত পোষণ করছে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
বিশেষ করে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস, সিয়েনা কলেজ, সিএনএন এর সাম্প্রতিক জরিপের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের একটি বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদনে দাবি করা হচ্ছে, চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এবার। যেখানে কোনো প্রার্থীকে এগিয়ে রাখার সুযোগ নেই।
নির্বাচনের আগে একটি জরিপ করেছে দ্য গার্ডিয়ান। সেখানে দেখা গেছে, অন্তত ১ পয়েন্টের ব্যবধানে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে আছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কামালা হ্যারিস। ১০ দিনের গড় হিসাবে হ্যারিসের প্রতি ভোটারদের সমর্থন ৪৭ থেকে ৪৬ শতাংশের মধ্যে ওঠানামা করছে। আর সিএনএনের জরিপ বলছে, দুই প্রার্থীর জনসমর্থন পৌঁছেছে সমান ৪৭ শতাংশে।
যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন, কামালা হ্যারিস বাইডেন প্রশাসনের ব্যর্থতার বিষয়গুলো সরাসরি মোকাবিলা না করে এড়িয়ে যাওয়া চেষ্টা করছেন। বারাক ওবামা ও মিশলে ওবামার পূর্ণ সমর্থন পেলেও কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের মধ্যে জনপ্রিয়তা হারাচ্ছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। বিশ্লেষকদের মন্তব্য, নির্বাচনের আগে কামালার গতিবিধিই বলে দিচ্ছে রিপাবলিকানদের তুলনায় ডেমোক্র্যাট শিবিরে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি আছে। আবার কোনো কোনো বিশ্লেষক বলছেন, প্রার্থিতা চূড়ান্তের শুরুতে কামালা এগিয়ে থাকলেও নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে ভাইস প্রেসিডেন্টের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছেন ট্রাম্প।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ক্লিভ উটসন বলেন, ‘কামালা হ্যারিসের প্রধান দায়িত্ব ছিল ডেমোক্র্যাট সমর্থদের সমন্বয় করা। বারাক ওবামার শাসনামল থেকে বাইডেন পর্যন্ত। বিশেষ করে বাইডেনকে নিয়ে যে ভীতি সৃষ্টি হয়েছিল তা দূর করা। কিন্তু কামালা এসব থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। যার কারণে কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষ ভোটার ও মিশিগানের আরব আমেরিকান ভোটারদের সমর্থন নিয়ে দ্বিধা-বিভক্তি সৃষ্টি হয়েছে। এটা ইঙ্গিত করে, ডেমোক্র্যাটরা চাপে আছে।’
সিএনএনের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ জ্যাকি কুচিনিক বলেন, ‘শুরুতে দুই প্রার্থীর জনপ্রিয়তার মধ্যে একটা ভারসাম্য ছিল। কিন্তু প্রার্থিতা চূড়ান্ত হওয়ার পরপরই কামালা হ্যারিস তীব্র সমর্থন পেতে শুরু করেন। সেই প্রেক্ষাপট আবার বদলেছে। দুই প্রার্থীর মধ্যে সমানে সমানে লড়াই হচ্ছে।’
যদিও, জনমত জরিপ কিংবা আত্মবিশ্বাস দিয়ে ওয়াশিংটনের মসনদে বসা যায় না। তাই ডেমোক্র্যাট না রিপাবলিকান কোন প্রার্থীর হাতে উঠবে হোয়াইট হাউজের শাসনভার তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে আরও কয়েকদিন।