উত্তর আমেরিকা
বিদেশে এখন
0

পশ্চিমাদের সঙ্গে সবচেয়ে বড় কারাবন্দি বিনিময় করলো রাশিয়া

বাইডেন প্রশাসনের কূটনৈতিক দক্ষতা ও পুতিনের নমনীয়তা। ফলাফল, স্নায়ুযুদ্ধের পর পশ্চিমা ও রাশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বড় বন্দি বিনিময় দেখলো বিশ্ব। ২৬ কারাবন্দিদের নিজ নিজ দেশে বরণ করে নেয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন মার্কিন, জার্মান ও রুশ সরকার প্রধান। ১৪ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো এই বন্দি বিনিময়কে দুপক্ষের জন্য উইন উইন সিচুয়েশন বলছেন বিশ্লেষকরা।

স্নায়ুযুদ্ধের পর রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমাদের সবচেয়ে বড় কারাবন্দি বিনিময় দেখলো বিশ্ব। এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা মধ্যস্থতার পর বাড়ি ফিরলেন ১৩ জার্মান, ১০ রুশ ও ৩ মার্কিন নাগরিক।

বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় মধ্যরাতে তুর্কিয়ের আঙ্কারা থেকে ৩ মার্কিন কারাবন্দিকে বহনকারী ফ্লাইটটি অবতরণ করে ম্যারিল্যান্ডের জয়েন্ট বেস অ্যান্ড্রিউসের রানওয়েতে। রাশিয়ায় আটকে রাখা বন্দিদের বরণ করে নেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিস। পরবর্তীতে স্বজনদের সঙ্গে দীর্ঘদিনের জমে থাকা চুম্বন ও আলিঙ্গনের পালা। নাগরিকরা ঘরে ফিরে আসায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

জো বাইডেন বলেন, 'মিত্রতা ও কূটনীতি অনেক পার্থক্য গড়ে দেয়। তারা সুযোগ পাওয়া মাত্রই আমাদের জন্য লড়েছে। সবাই ঘরে ফিরে আসায় আমরা খুশি।'

যুক্তরাষ্ট্রের মতো একই চিত্র ছিলো জার্মানি ও রাশিয়ায়। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বিমানবন্দরে গিয়ে বরণ করেন নিজ দেশের কারাবন্দিদের। মূলত দুপক্ষের বন্দি বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও জার্মানি ছাড়াও নানাভাবে জড়িয়ে ছিলো বেলারুশ, স্লোভেনিয়া, নরওয়ে, পোল্যান্ড ও তুর্কিয়ে।

২৬ কারাবন্দির মধ্যে ২ জন ছিলো অপ্রাপ্তবয়স্ক। রাশিয়ার থেকে দেশে ফেরা মার্কিনিদের মধ্যে ২ জন ছিলেন সাংবাদিক। অপরজন সাবেক ইউএস মেরিন সদস্য। ওয়ালস্ট্রিট জার্নালের সাংবাদিক ইভান গার্শকোভিচকে আবারও বার্তাকক্ষে ফিরে পাওয়ার মুহূর্তটি ক্যামেরায় ধারণ করে রাখেন সহকর্মীরা। জার্মানিতে ফিরে যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন ২ জন রুশ বিরোধী নেতা, আইনজীবী, অধিকারকর্মী ও শিল্পী। অন্যদিকে পশ্চিমাদের কাছ থেকে ছাড়া পাওয়া রুশ ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন গোয়েন্দা, সাইবার হ্যাকার, দণ্ডপ্রাপ্ত খুনি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, কারাবন্দি বিনিময় যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া দুপক্ষের জন্যই উইন উইন সিচুয়েশন। বাইডেন প্রশাসনের কূটনৈতিক দক্ষতা সাহায্য করবে কামালা হ্যারিসকে নির্বাচনি দৌড়ে এগিয়ে থাকতে। অন্যদিকে পুতিনের নমনীয় মনোভাবের কারণে পশ্চিমাদের আস্থা পাবে রাশিয়া। ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে ইউক্রেন যুদ্ধে।

কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক টিমোথি ফ্রাই বলেন, 'এই পদক্ষেপের কারণে যেসব পশ্চিমারা রাশিয়াকে বিশ্বাসযোগ্য সহযোগী হিসেবে বলছিলেন, তাদের কথা আরও জোড়ালো হবে। আমি মনে করি, বাইডেন প্রশাসন বলতে পারবে তারা কঠোর পরিশ্রম ও সমঝোতার মাধ্যমে চুক্তি সম্পন্ন করতে পেরেছেন।'

সবশেষ ২০১০ সালে ১৪ জন বন্দি বিনিময় করে রাশিয়া ও পশ্চিমা দেশগুলো।

এভিএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর