টানা ৪টি অঙ্গরাজ্যে রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বাছাইয়ে জয় পেয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্ভাবনা রয়েছে ডিসেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আবারও জো বাইডেনের মুখোমুখি হওয়ার। ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশটির প্রেসিডেন্টের আসনে আবারও বসলে বদলাতে পারে বিশ্ব রাজনীতির সমীকরণ।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন বলছে, ক্ষমতায় আসলে যুদ্ধ বন্ধে ইউক্রেনকে রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতায় বসতে বাধ্য করবেন ট্রাম্প। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টাদের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, ইউক্রেনকে সমঝোতার টেবিলে বসাতে দেয়া হতে পারে আর্থিক সহায়তা বন্ধের হুমকি। তবে বেসরকারি কোনো মার্কিন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কোনো দেশের সরকারের পররাষ্ট্র বিষয়ক আলোচনা অবৈধ হওয়ায় এখনও কোনো পদক্ষেপ নেননি ৭৭ বছর বয়সী এই নেতা।
মস্কো কিয়েভের সঙ্গে আলোচনায় রাজি থাকলেও পুতিন প্রশাসনের সঙ্গে শান্তি আলোচনা নিষিদ্ধে ডিক্রি জারি আছে ইউক্রেনে। তাই প্রায় ২ বছর হয়ে গেলেও বন্ধ হচ্ছে না রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ।
২০১৭ সালে ক্ষমতায় আসার পর ন্যাটো সদস্যভুক্ত দেশগুলোর প্রতিরক্ষা বাজেট মোট জিডিপির ২ শতাংশে উন্নীত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে গেল বছরের এপ্রিল পর্যন্ত জোটটির ৩১ সদস্যের মধ্যে মাত্র ১১টি দেশ পূরণ করতে পেরেছে এই নির্দেশনা। তাই ক্ষমতায় আসলে বাকি দেশগুলোকে শত্রুর আক্রমণ থেকে সুরক্ষা দেয়া হবে না বলে আবারও হুমকি দিলেন ট্রাম্প।
তিনি বলেন, 'একজন সদস্যদেশের প্রধান আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, ন্যাটো জোটে চাঁদা না দিলে আপনারা আমাদের সুরক্ষা দিবেন না? আমি উত্তর দিলাম আপনি ঠিকই বুঝেছেন, আমি এই কথাই বুঝিয়েছি আমরা আপনাদের সুরক্ষা দিবো না।'
ট্রাম্পের ঘোষণাকে সমর্থন দিয়েছেন খোদ ন্যাটো প্রধান। জানান, জোটের ৮০ শতাংশ অর্থই আসে ৬টি দেশ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, তুর্কিয়ে, নরওয়ে ও আইসল্যান্ড থেকে, যারা কেউ ইইউ'র সদস্য নয়। তাই ন্যাটোকে এড়িয়ে একলা চলো নীতিতে আগালে বোকামি করবে ইউরোপ।
ন্যাটো মহাসচিব জেন্স স্টোলটেনবার্গ বলেন, 'উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলোকে আমরা পরস্পর সুরক্ষা দেই। এটি দু'টি মহাদেশের জন্যই মঙ্গলজনক। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিজ দেশগুলোকে সুরক্ষা দেয়ার সক্ষমতা নেই। ন্যাটো প্রতিরক্ষা বাজেটের ৮০ শতাংশ আসে ইইউ'র বাইরে থাকা দেশগুলোর কাছ থেকে।'
শুধু সুরক্ষা দেয়া বন্ধ করাই নয়, প্রতিরক্ষা বাজেটে সবাই সমান অর্থ ব্যয় না করলে ন্যাটো জোট থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে আনতে পারেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সিএনএনকে দেয়া স্বাক্ষাৎকারে এমনটাই আভাস দিয়েছেন ট্রাম্পের সাবেক জাতীয় সুরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা জন বোল্টন। তিনি জানান, ২০১৮ সালেও এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তবে শেষ সময় এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।