গাজায় গণহত্যা বন্ধ ও ফ্লোটিলা কর্মীদের মুক্তির দাবিতে ইউরোপ-এশিয়ায় বিক্ষোভ

ইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভ
ইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভ | ছবি: সংগৃহীত
0

গাজায় গণহত্যা বন্ধ ও ইসরাইলি বাহিনীর হাতে আটক ফ্রিডম ফ্লোটিলার অধিকারকর্মীদের মুক্তির দাবিতে উত্তাল ইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশ। বিভিন্ন শহরে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন হাজারো মানুষ। গাজায় চলমান মানবিক সংকট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বিশ্ব নেতৃত্বের প্রতি আহ্বান জানান বিক্ষোভকারীরা। গাজা অভিমুখী নৌ-বহরগুলোকে সমর্থন জানিয়ে সুমুদ ফ্লোটিলার অধিকারকর্মীদের আটকের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন তারা। মানবতার পক্ষে এবং দমননীতির বিরুদ্ধে এক হয়ে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয় বিভিন্ন সমাবেশ থেকে।

গাজায় শান্তি ফেরাতে ট্রাম্পের প্রস্তাবে হামাস ও ইসরাইলের আংশিক সম্মতি নিয়ে বিশ্বজুড়ে চলছে আলোচনা। সেই সঙ্গে গাজা অভিমুখী সুমুদ ফ্লোটিলা থেকে পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গসহ কয়েকশ অধিকারকর্মীর আটক ও নির্যাতনের ঘটনায় নিন্দার ঝড় বইছে। দেশে দেশে চলছে ইসরাইলবিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভ।

রোববার সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডে বিক্ষোভে নামে শত শত মানুষ। এসময় তারা ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে গণহত্যা বিরোধী নানা স্লোগান দিতে থাকে। দেশটিতে অবস্থিত ইসরাইলি দূতাবাসের সামনেও বিক্ষোভ করে তারা। বিক্ষোভকারীরা গণহত্যা বন্ধে ইসরাইলকে বাধ্য করতে সার্বিয়ান সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

স্থানীয়দের মধ্যে একজন বলেন, ‘ইসরাইল গাজায় আমাদের ভাইদের ওপর ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। অনেকে না খেয়ে আছে। ৬০ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে। এতকিছুর পরও যারা চুপ আছে, তাদের বিবেককে জাগ্রত করতেই আমরা একত্র হয়েছি।’

অন্য একজন বলেন, ‘রাজনীতি কোন পথে এগিয়ে যাচ্ছে এটি নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা নেই। আমি চাই নিরীহ মানুষদের ওপর চালানো হত্যাযজ্ঞ বন্ধ হোক। শুধু একটি স্থানে জন্ম নেয়ায় গণহত্যার স্বীকার হতে হবে, এটা গ্রহণযোগ্য নয়।’

গাজায় ইসরাইলি গণহত্যা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে নেদারল্যান্ডসেও। বিক্ষোভকারীরা ডাচ সরকারের প্রতি ইসরাইলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানান।

বিক্ষোভকারীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘আমি মনে করি ইসরাইলকে চাপে ফেলতে ডাচ সরকারের অনেক কিছু করার আছে। তবে সরকার শুধু কথাই বলেই যাচ্ছে। কোনো জোরালো পদক্ষেপ এখনও গ্রহণ করেনি। একারণে ইসরাইল গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে।’

ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধ ও ফ্রিডম ফ্লোটিলায় আটক মানবাধিকারকর্মীদের মুক্তির দাবিতে তুরস্কের ইস্তাম্বুল ও আঙ্কারার রাস্তায় নামে শত শত মানুষ। প্রতিবাদী স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে চারপাশ।

বিক্ষোভকারীরা ফিলিস্তিন ও তুরস্কের পতাকা হাতে ও ফিলিস্তিনের ঐতিহ্যবাহী কেফিয়া স্কার্ফ পরিধান করে।

আরও পড়ুন:

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় থাকা অধিকার কর্মীদের ওপর ইসরাইলের আক্রমণাত্নক আচরণ এবং নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়েছে পাকিস্তানেও। রোববার, দেশটির দক্ষিণের একটি শহরে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এসময় তারা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসকে সমর্থন জানান।

জামায়াত-ই-ইসলামী পাকিস্তানের প্রধান হাফিজ নাইম উর রেহমান বলেন, ‘শুধু একটি রাষ্ট্রই থাকবে, সেটি হলো ফিলিস্তিন। এর বাইরে কোনো রাষ্ট্র থাকবে না। হামাস যে প্রস্তাবনা দিয়েছে তাতে সম্মতি জানাতে বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানাই।’

এছাড়া ফ্রিডম ফ্লোটিলায় আটক জিম্মিদের মুক্তি চায় বিশ্ববাসী। শুধু একটি স্থানে জন্ম নেয়ায় গণহত্যার স্বীকার হতে হবে, এটা গ্রহণযোগ্য নয়।

বিক্ষোভকারী গণহত্যা বন্ধে ইসরাইলকে বাধ্য করতে সার্বিয়ান সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

গাজায় ইসরাইলি গণহত্যা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে নেদারল্যান্ডসেও। এতে অংশ নেয়া বিক্ষোভকারীরা ইসরাইলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ডাচ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

বিক্ষোভে অংশ নেয়াদের মধ্যে একজন বলেন, ‘আমি মনে করি ইসরাইলকে চাপে ফেলতে ডাচ সরকারের অনেক কিছু করার আছে। তবে সরকার শুধু কথাই বলেই যাচ্ছে। কোনো জোরালো পদক্ষেপ এখনও গ্রহণ করেনি। একারণে ইসরাইল গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে।’

ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধ ও ফ্রিডম ফ্লোটিলায় আটক মানবাধিকারকর্মীদের মুক্তির দাবিতে তুরস্কের ইস্তানবুল ও আঙ্কারায় রাস্তায় নামে শত শত মানুষ। তারা ফিলিস্তিন ও তুরস্কের পতাকা হাতে ও ফিলিস্তিনের ঐতিহ্যবাহী কেফিয়া স্কার্ফ পরিধান করে গাজায় চলমান গণহত্যার জন্য ইসরাইলকে দায়ী নানা প্রতিবাদী স্লোগান দিতে থাকে।

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় থাকা অধিকার কর্মীদের ওপর ইসরাইলের আক্রমণাত্নক আচরণ

এসব বিক্ষোভ থেকে একটাই দাবি, প্রায় দুই বছরের হত্যাযজ্ঞ থেকে ফিলিস্তিনিদের মুক্তি। আর এ প্রক্রিয়াটি দ্রুত সম্পন্ন করতে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান আন্দোলনকারীদের।

এসএস