তিন দশকেরও বেশি সময় ইরান সমর্থিত লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর নেতৃত্বে ছিলেন হাসান নাসরাল্লাহ। শিয়া গোষ্ঠীর মধ্যে তিনি ছিলেন অত্যন্ত শ্রদ্ধার পাত্র। তার নেতৃত্বে হিজবুল্লাহ আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তার করে। যার মাধ্যমে আধুনিক আরব ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হয়ে উঠেন তিনি।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর বিমান হামলায় ২০২৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর প্রাণ হারান নাসরাল্লাহ। এরপর সংগঠনটির দায়িত্ব আসে সাফিউদ্দিনের কাঁধে। একমাস পর তিনিও ইসরাইলি হামলায় নিহত হন। শীর্ষ নেতাদের মৃত্যুতে অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়ে হিজবুল্লাহ। পরিবর্তন আসে মধ্যপ্রাচ্যের ক্ষমতার ভারসাম্যেও।
মৃত্যুর প্রায় পাঁচ মাস পর রাজধানী বৈরুতে নিয়ে আসা হয় দুই নেতার মরদেহ। ৫০ হাজার মানুষের ধারণক্ষমতার স্পোর্টস সিটি স্টেডিয়াম কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে। স্টেডিয়ামের বাইরেও ঢল নামে লাখো মানুষের। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ইরান, ইয়েমেনসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ছুটে আসেন রাজনীতিবিদ, প্রতিনিধিসহ সাধারণ মানুষ।
শ্রদ্ধা জানাতে আসা একজন বলেন, ‘দুই নেতার মৃত্যু গোটা শিয়া মুসলিম গোষ্ঠীর জন্য বড় ক্ষতি। তিনি আমাদের সবার কাছে শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন।’
আরেকজন বলেন, ‘নাসরাল্লাহ ও সাফিউদ্দিনসহ হিজবুল্লাহর শহিদ সব নেতা আমাদের হৃদয়ে চিরকাল থাকবে। তারা আমাদের আরও শক্তিশালী এবং মাথা উঁচু করে বাঁচতে শিখিয়েছেন।’
এদিকে, জানাজায় অংশ নিয়ে হিজবুল্লাহ প্রধান নাঈম কাশেম বলেন, রক্ত দিয়ে হলেও নাসরাল্লাহর ইচ্ছা পূরণ করা হবে। নিজের জীবন দিয়ে মুসলিম জাতিকে রক্ষার চেষ্টা করেছেন নাসরাল্লাহ। কোনো বাধাই আর তাদের পরাজিত করতে পারবে না।
হিজবুল্লাহ প্রধান নাঈম কাশেম বলেন, ‘আমরা নতি স্বীকার করব না। হিজবুল্লাহ নেতাদের হত্যা এবং শত্রুদের দখলদারিত্বের অভিযান মেনে নেয়া হবে না। কেউ আমাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে পারবে না। আমাদের নিয়ন্ত্রণ করার কোনো সুযোগ শত্রুদের দেয়া হবে না।’
সোমবার বৈরুতের দক্ষিণে বিমানবন্দর সড়কের কাছে সমাহিত করা হবে হাসান নাসরাল্লাহকে। একই সময়ে সাফিউদ্দিনকে সমাহিত করা হবে তার নিজ শহর দেইর কানুন এন-নাহরে।