মানবজাতির কল্যাণের হাতিয়ার হয়ে উঠুক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা: ফ্রান্স

ইউরোপ
বিদেশে এখন
0

মানবজাতির কল্যাণের হাতিয়ার হয়ে উঠুক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। মঙ্গলবার প্যারিসে এআই অ্যাকশন সামিটের সমাপনী দিনে বিশ্বনেতাদের এই বার্তাই দিয়েছেন আয়োজক দেশ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখো। এছাড়া, এআইয়ের অপব্যবহার রোধে আন্তর্জাতিক আইন প্রণয়নে জোর দিয়েছেন সহ-আয়োজক দেশ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মনে করেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রসারে বাধা হতে পারে ইউরোপের কঠোর নিয়ন্ত্রণ।

দৈনন্দিন জীবন থেকে রাষ্ট্র পরিচালনা, অপরিহার্য হয়ে উঠছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর প্রযুক্তির ব্যবহার। তাই নিরাপত্তা, অর্থনীতি ও জলবায়ুর পর এআই অ্যাকশন সামিট -২০২৫ এর দিকে নজর ছিল বিশ্বের। প্যারিসে ফ্রান্স-ভারতের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত দুই দিনের এই সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন টেক জায়ান্ট, নামীদামী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীসহ অন্তত ১শ' দেশের রাষ্ট্রপ্রধান।

প্রধান নির্বাহী, অ্যালফাবেটের প্রধান নির্বাহী সুন্দর পিচাই বলেন, ‘ভবিষ্যতে আপনি যে কাজই করতে যাবেন, সেখানে এআই নির্ভর কোনো প্রযুক্তির প্রভাব টের পাবেন। রেডিওলজিস্টের রিপোর্ট দেখা বা চিকিৎসকের রোগীর সাথে সাক্ষাৎ- এ ধরণের কর্ম প্রবাহে এআই গভীরভাবে জুড়ে থাকবে। ২ থেকে ৪ বছরের মধ্যেই এ পরিবর্তন চোখে পড়বে।’

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার নিয়ে এবারের সামিটে সবচেয়ে আলোচিত প্রশ্নের একটি, কীভাবে বন্ধ হবে এর অপব্যবহার। যদিও নবনিযুক্ত মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেছেন, ইউরোপের নিয়ন্ত্রণ ও বিধিনিষেধের কবলে পড়ে সম্ভাবনা হারাচ্ছে এআই প্রযুক্তি। তবে, যুক্তরাষ্ট্রের এই অভিযোগ আমলে না নিয়ে ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লিয়েন বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বাজার ধরতে প্রস্তুত ইউরোপ।

সম্ভাবনাময় এই খাতে রাষ্ট্রীয় নজরদারি বাড়িয়ে বিশ্ববাসীর উপকারে এআই টুলস ব্যবহার নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান আয়োজক দেশ ফ্রান্সের রাষ্ট্রপ্রধান। সহ-আয়োজক দেশ ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এআইয়ের কারণে কিছু পেশা হুমকির মুখে পড়লেও, নতুন কাজের সুযোগও সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া, জাতিগত বৈচিত্র্য বিবেচনায় নিয়ে নিজস্ব ভাষায় ওপেন এআই নেটওয়ার্ক মডেল নির্মাণের অগ্রগতি নিয়েও কথা বলেন মোদি।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘বন্ধুরা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর প্রযুক্তির সবচেয়ে আশঙ্কাজনক দিক, কাজের সুযোগ কমে যাওয়া। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী, প্রযুক্তির কারণে নতুন কাজের সুযোগ কখনও বিলুপ্ত হয়নি। প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ার সাথে সাথে নিত্যনতুন কাজের সম্ভাবনাও সৃষ্টি হয়।’

প্রেসিডেন্ট, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখো বলেন, ‘প্রযুক্তি জগতে যে অসাধারণ রূপান্তর চোখে পড়ছে, আমি মনে করি, এটাই আগামী দিনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। কম্পিউটিং সক্ষমতা অর্জনের পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব কী তা আয়ত্ত করতে হবে। এই প্রযুক্তিকে যে কোনো মূল্য মানব সেবায় কাজে লাগিয়ে সফল হওয়াই আমাদের লক্ষ্য।’

এআই সংশ্লিষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এবারের প্যারিস এআই সামিটে 'স্টেটমেন্ট অন ইনক্লুসিভ সাসটেইনেবল আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স' শীর্ষক একটি ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেছে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো। যদিও এ তালিকায় নেই যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন। ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি, নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় বিশ্বনেতাদের আহ্বান উপেক্ষা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

এএইচ